দিনশেষে জয়ী জার্মান রেফারি বাস্তিয়ান ডানকের্ট!
ধর্ম মানে পারস্পরিক সম্প্রীতি,ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যের এক গভীর মেলবন্ধন। ধর্মীয় ভ্রাতৃত্বে বংশমর্যাদার পার্থক্য নেই, নেই দেশ ও ভাষার পার্থক্য। রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের সওগাত নিয়ে মুসলিম বিশ্বে চলছে মাহে রামাদান।
এবার পবিত্র রোজার কল্যাণেই অসাধারণ এক ভ্রাতৃত্বের ছাপ পড়েছে জার্মান বুন্দেসলিগায়।লিগের ম্যাচ খেলতে গতকাল মাঠে নেমেছিল দুই জার্মান ক্লাব লাইপজিগ ও হফেনহেইম। ম্যাচের ৩০ মিনিটের মাথায় হুট করে কিছুক্ষণের জন্য পানি পানের বিরতির ঘোষণা দেন রেফারি বাস্তিয়ান ডানকের্ট।
কিন্তু লাইপজিগের আকাশ ছিল মেঘলা, তাপমাত্রা ছিল ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নিঃসন্দেহে বেশ ঠান্ডাই বলা চলে।কিন্তু রেফারির খেলা থামানোর কারণ কী?
৯০ মিনিটের টানা দৌড়ঝাপেও পবিত্র এই রমজান পালন থেকে বিরত থাকেননা মুসলিম ফুটবলারই। তেমনি রোজা রেখে লাইপজিগের হয়ে খেলতে নেমেছিলেন ফ্রান্সের মুসলিম ডিফেন্ডার মোহাম্মদ সিমাকান সিমাকানের জন্যই সূর্য ডুবে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক মিনিটের জন্য খেলা থামান জার্মান রেফারি বাস্তিয়ান ডানকের্ট। রোজা রাখা সিমাকান যেন ইফতারের
সুযোগ পান, সে জন্যই রেফারি খেলা থামানোর বাঁশি বাজান।
সাধারণত প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ম্যাচ হলে রেফারি পানি পানের বিরতির ঘোষণা দিতে পারেন। কিন্তু এমন ঠান্ডা আবাহাওয়াও খ্রিস্টান রেফারির এই পদক্ষেপ মুগ্ধ করেছে লাইপজিগকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অস্তগামী সূর্যের ছবি পোস্ট করে ক্লাবটি লিখেছে, ‘রেফারি বাস্তিয়ান ডানকের্টের অসাধারণ আচরণ। সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে তিনি লাইপজিগ ও হফেনহেইমের মধ্যকার ম্যাচটা থামিয়ে দিয়েছেন, যেন লাইপজিগের ডিফেন্ডার মোহাম্মদ সিমাকান রোজা ভাঙতে পারেন।’
সিমাকানও তাই কোনো অসুবিধা ছাড়াই ইফতার করে রোজা ভাঙতে পেরেছেন।পানি পানের পাশাপাশি সিমাকান খেয়েছেন এনার্জি বার ও এনার্জি জেল।
সিমাকান নিজেও রেফারিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, ‘রেফারি আর খেলোয়াড়দের ধন্যবাদ আমাকে ইফতারের জন্য কয়েক মিনিট সময় দেওয়ার জন্য।’
ম্যাচ শেষে জয় পেয়েছে সিমাকানের লাইপজিগই। ফরাসি ফরোয়ার্ড ক্রিস্টোফার এনকুনকু, জার্মান ডিফেন্ডার মার্সেল হালস্টেনবার্গ ও হাঙ্গেরিয়ান মিডফিল্ডার দমিনিক জবোস্লাইয়ের কল্যাণে ৩-০ গোলের জয় পেয়েছেন সিমাকানরা। তবে জয় ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছে রেফারি খ্রীস্টান বাস্তিয়ান ডানকের্টের ওই ভ্রাতৃত্যময়ী সিদ্ধান্তটাই!