গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে দুই জয়— ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে থাকলেও বাংলাদেশের সুপার ফোর আটকে আছে যদি কিন্তুর উপর। আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচের ফলাফল নিজেদের পক্ষে গেলেই কেবল বাংলাদেশের সুপার ফোর নিশ্চিত হতে পারে।
কারণ শ্রীলঙ্কার সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও নেট রান রেটে পিছিয়ে টাইগাররা।
৪ পয়েন্ট ও +১.৫৪৬ নেট রান রেট নিয়ে সবার উপরে শ্রীলঙ্কা। দুইয়ে আছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট তাদের।
যেখানে বাংলাদেশের নেট রান রেট –০.২৭০। যেখানে তিন থাকা আফগানরা এগিয়ে আছে নেট রান রেটে।
আফগানিস্তান আগে ব্যাটিং করে এবং ৭১ কিংবা তাঁর চেয়ে বেশি রানের ব্যবধানে ম্যাচ জিতে তাহলে আফগানদের সঙ্গে সুপার ফোরে যাবে বাংলাদেশও।
যদি আফগানরা পরে ব্যাটিং করে তাহলে অন্তত ৫৩ বল বাকি থাকতেই তাদের জিততে হবে।
তাহলেই কেবল শ্রীলঙ্কার নেট রান রেট বাংলাদেশের পেছনে চলে যাবে এবং লিটনরা তখন সুপার ফোরে জায়গা করে নেবে।
এই অঙ্ক কষার অভ্যাস বাংলাদেশের নতুন নয় যদিও। এই ম্যাচের আগেও তো কত অঙ্ক।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে কখনো দেশের বাইরে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে হংকংকে হারিয়ে দেওয়ার আত্মবিশ্বাস তাদের।
একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে অতৃপ্তির জয়ের পর শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে খাদের কিনারায় পৌঁছে গিয়েছিল বাংলাদেশ।
আপাতত সেখান থেকে কিছুটা হলেও তো ফিরে আসা গেছে।
হংকংয়ের সাথে কয়েক ওভার আগে জিততে পারলে অবশ্য এসব নিয়ে বাংলাদেশকে ভাবতেই হতো না। তানজিদ অতীতকে সামনে টেনে আনতে চান না।
বাঁহাতি ওপেনার বলেন,
‘এটা নিয়ে আফসোস করতে চাই না। যেটা অতীত, সেটা হয়ে গেছে। এখন আমাদের সামনে যে সমীকরণটা থাকবে, সেটার দিকেই তাকিয়ে থাকব।’
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে নেট রান রেট ভাবনায় ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তানজিদ বলেন,
‘অবশ্যই মাথায় ছিল। সুযোগ ছিল আমাদের। আমাদের দলের জন্য ভালো হতো হয়তো (ব্যবধান বড়) হলে। হয়নি, এখন কিছু করার নেই। কারণ, আমাদের ম্যাচ এটা জিততেই হতো। ম্যাচ জিতেছি, এটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার।’
আইসিসি কিংবা এসিসির টুর্নামেন্ট এলেই প্রত্যাশিতভাবে পারফর্ম করতে পারে না বাংলাদেশ।
বেশ কয়েকটি আসরে তুলনামূলকভাবে ভালো করলেও অনেক সময়ই পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য প্রায়শই সমীকরণ মেলাতে হয়েছে।
এশিয়া কাপের প্রায় প্রতি আসরেই এমন চিত্র চোখে পড়ে।
সমর্থকরা এখন প্রায়শই সমীকরণ মেলানো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রল করেন।
তানজিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বড় টুর্নামেন্ট হলেই কেন বাংলাদেশকে সমীকরণ মেলাতে হয়। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
‘আমরা কখনো এভাবে দেখি না। প্রতিটা ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগের ম্যাচটা হেরে গিয়েছি, কিছু বলার নাই ওই ম্যাচটা নিয়ে। কারণ, ম্যাচটা খুব বাজেভাবে হেরেছি। আমরা যখনই কোনো ম্যাচ খেলতে মাঠে যাই, ১০০ ভাগই দেওয়ার চেষ্টা করি।’
কাল তৃপ্তির হাসি নিয়ে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়াম ছেড়েছেন দর্শকেরা। মরুর পথ ধরে তাঁরা গাড়ি নিয়ে গন্তব্যে ছুটতে ছুটতে হয় খুঁজবেন সুপার ফোরে যাওয়ার সমীকরণটাও।
সেখানে দুশ্চিন্তা ভর করবে, ভয়ও। কে হারলে কী হবে, এই জটিল হিসাবের মারপ্যাঁচে হয়তো ভুলে যেতে হবে ম্যাচ জয়ের আনন্দ।
তবু যে দলটা সমীকরণ মিলিয়ে জিততে জানে, তাদের ওপর বাংলাদেশ দলের মুশতাক আহমেদের ভাষায় ‘বিশ্বাস’টাও নিশ্চয়ই রাখবেন তাঁরা!
বাংলাদেশ কি এখন বাড়ির পথ ধরবে নাকি সুপার ফোরের ম্যাচ খেলতে যাবে দুবাই? সে জন্য কাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আপাতত আর উপায় নেই।


