কুমিল্লায় স্মরণীয় দিনে আশরাফুলের বিদায়
প্রথমবার যে মাঠে পেশাদার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরলো মোহামেডান, কুমিল্লায় স্মরণীয় দিনে সেই মাঠেই ফুটবল থেকে অবসরে গেলেন ব্রাদার্স ইউনিয়নের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা।
কুমিল্লায় মোহামেডান-ব্রাদার্সের ম্যাচের পরই লিগ চ্যাম্পিয়নকে ট্রফি দেওয়া হবে, তাই সেই মাঠে আশরাফুল রানা খেলবেন, বিদায় নেবেন। সেটি আগেই নির্ধারণ করা ছিল।
খেলা শুরু হওয়ার আগে আশরাফুলকে ব্রাদার্স ইউনিয়নের ফুটবলাররা গার্ড অব অনার দিলেন।
জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ব্রাদার্সেরও অধিনায়ক। কিন্তু কাল রানার অবসরের দিনে অধিনায়কত্ব দেওয়া হয় রানাকে। ৪৪ মিনিটে রানাকে তুলে নেন গাম্বিয়ান কোচ ওমর সিসে।
মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মোহামেডানের অধিনায়ক সুলায়মান দিয়াবাতে, মেহেদী হাসান, জাহিদ হোসেন শান্তরা বুকে জড়িয়ে ধরেন রানাকে।
আশরাফুল ইসলাম রানা জাতীয় দলে ২৫ ম্যাচ খেলেছেন। সব সময় ভালো খেলছেন তিনি। শারীরিক উচ্চতায় পারফেক্ট গোলরক্ষক। অনেক বড় বড় ম্যাচ খেলেছেন তিনি।
বিশেষ করে ২০১৯ সালে অক্টোবরে কলকাতার সল্ট লেকের মাঠে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ১-১ গোলের ড্র হওয়া স্মরণীয় ম্যাচটায় গোলপোস্টের নিচে ছিলেন রানা। স্মরণীয় কারণ যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ৬০ হাজারের বেশি দর্শক ছিল গ্যালারিতে।
ভারতীয় সমর্থকরা উত্তেজনায় ছিল, তারা কত বড় ব্যবধানে হারাবে সেটি দেখতেই মাঠে এসেছেন। বাংলাদেশ গোল করে এগিয়ে ছিল, পরে গোল হজম করে বাংলাদেশ। নানা কারণে স্মরণীয় ছিল সেই ম্যাচ।
আরও কয়েকটি স্মরণীয় ম্যাচ রয়েছে রানার। যেগুলো বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য স্মরণীয় বটে।
রানা সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন।
সেখানে ফুটবল খেলতেন। কিন্তু তার স্বপ্ন তিনি শুধুই ফুটবল খেলবেন। উচ্চাভিলাসী স্বপ্ন নিয়ে চাকরি ছেড়ে মোহামেডানে যোগ দেন রানা, ২০১৪ সালে। তারপর আর তাকে ফিরে তাকাতে হয়নি।
যতদিন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলেছেন দারুণ পারফরম্যান্স করেছেন। কখনো কোনো সমস্যা হলেও তিনি প্রকাশ করতেন না। নিজের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছেন।
একটা সময় জাতীয় দল থেকে সরে গেলেন। পেশাদার ফুটবল প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ট্রফি ঘরে তোলার মোহামেডানের স্মরণীয় দিনে রানা ক্লাব ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন।
মোহামেডান-ব্রাদার্স ম্যাচের বিরতির সময় রানাকে কেউ হাতে ফুলের শুভেচ্ছা দেয়, ক্রেস্ট উপহার দেয়, গলায় মালা পরিয়ে দেয়।
বাফুফে থেকেও শুভেচ্ছা জানিয়ে ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। মোহামেডান থেকেও আলাদা করে শুভেচ্ছা দেওয়া হয়।
ব্রাদার্সের কর্মকর্তারা ক্রেস্ট উপহার দেন, খেলোয়াড়রাও শুভেচ্ছা দেন, আবাহনী থেকেও কুমিল্লায় গিয়ে উপহার দেওয়া হয়। সাবেক ফুটবলার নজরুল ইসলাম, প্রাণতোষ কুমার ছিলেনও উপস্থির ছিলেন।
ফটির্স এফসি, কুমিল্লা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন থেকেও বিদায়ী শুভেচ্ছা দেওয়া হয়।
মাঠ থেকে ড্রেসিং রুমে ফেরার সময় ভাষা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামের গ্যালারির কাছে গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা।