পিএসজিকে আতঙ্কিত করেও চোখের জলে মার্তিনেজের অ্যাস্টন ভিলার বিদায়
অ্যাস্টন ভিলা ৩:২ পিএসজি (দুই লেগ মিলিয়ে পিএসজি ৫-৪ ব্যবধানে)
শেষ বাঁশি বাজতেই কাছাকাছি থাকা একটা পানির বোতলে কিক মেরে ভেতরে থাকা রাগ-ক্ষোভই হয়তো ঝাড়লেন উনাই এমিরি। প্রতিপক্ষকে আতঙ্কিত করে ম্যাচ জিতেও যে চোখের জলে অ্যাস্টন ভিলার বিদায়, এমতাবস্থায় আর কী-ই-বা করার ছিল ভিলার কোচের!
আগের ম্যাচটায় পিএসজির মাঠে দুয়ো শুনতে থাকা আর্জেন্টাইন বিশ্বজয়ী এমিলিয়ানো মার্তিনেজের জন্য ম্যাচটা ছিল প্রতিশোধের। কিন্তু তিনি প্রতিশোধ নেবেন কী, উল্টো ভুল করে পিএসজির পাতেই বল তুলে দিলেন।
সেখান থেকে গোল! এরপর আরও এক গোল হজম করে ভিলা আজ ৩-২ গোলে জিতেছে।
দুর্দান্ত খেলে ৯০ মিনিটের ম্যাচ জিতেছে ঠিক কিন্তু, আগের নব্বই মিনিটই গড়ে দিয়েছিল ব্যবধান। চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে অ্যাস্টন ভিলা ৩-২ ব্যবধানে জিতেও দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ অগ্রগামিতায় সেমিফাইনালে উঠেছে পিএসজিই।
চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসে দ্বিতীয় লেগে ঘুরে দাঁড়ানোর অবিশ্বাস্য ম্যাচের গল্পে ঘুরেফিরেই আসে ২০১৭ সালের বার্সেলেোনা-পিএসজি কোয়ার্টার ফাইনাল।
যে ম্যাচের প্রথম লেগে পিএসজি জিতেছিল ৪-০ গোলে, পরের লেগে বার্সা জিতেছিল ৬-১ গোলে। বহুল আলোচিত সেই ম্যাচে পিএসজির ডাগআউটে ছিলেন এমিরি, বার্সার ডাগআউটে লুইস এনরিকে।
আট বছর পর দুই কোচ আরেকটি কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি অ্যাস্টন ভিলা-পিএসজির হয়ে।
এর মধ্যে গত সপ্তাহে প্যারিসে প্রথম লেগ পিএসজি ৩-১ ব্যবধানে জেতায় দ্বিতীয় লেগে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লেখার চ্যালেঞ্জটা ছিল এমিরির অ্যাস্টন ভিলার। সেই কাজটা তাঁর দল করেছেও। কিন্তু যথেষ্ট হয়নি।
ভিলার চ্যালেঞ্জ কিন্ত দ্বিতীয় লেগের প্রথম আধা ঘণ্টার মধ্যে প্রায় দ্বিগুণে পরিণত হয়েছিল। ১১তম মিনিটে আশরাফ হাকিমি আর ২৭তম মিনিটে নুনো মেন্দেজ গোল করে পিএসজিকে ম্যাচে ২-০ এবং দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন।

এরমধ্যে হাকিমির গোলটির জন্য নিজেকেই দায়ী করার কথা গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজের। স্লাইড করে বল ধরতে না পেরে উল্টো বল তুলে দিয়েছিলেন হাকিমির কাছে, যে সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি মরোক্কান ডিফেন্ডার।
৪ গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা অ্যাস্টন ভিলা ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে ৩৪তম মিনিট থেকে। ইউরি টিয়েলেমানসের শট পিএসজি ডিফেন্ডার পাচোর গায়ে লেগে জালে জড়িয়ে যায়।
ভিলা দ্বিতীয় গোল করে ৫৫তম মিনিটে। বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে বল জালে পাঠান জন ম্যাকগিন। ম্যাচের স্কোরলাইন হয় ২-২, দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩।
এর দুই মিনিট পরই ম্যাচে তৃতীয় গোল পেয়ে যায় অ্যাস্টন ভিলা। মার্কাস রাশফোর্ডের কাট ব্যাক থেকে বল পেয়ে গোল করেন এজরি কনস্টা। ব্যবধান মাত্র ১ গোলের মধ্যে নামিয়ে এনে আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে অ্যাস্টন ভিলা।
তবে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান পিএসজি গোলকিপার জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। টিয়েলেমানস ও মার্কো আসেনসিওর দুটি সম্ভাব্য গোল আটকে দেন এই ইতালিয়ান গোলকিপার।

যোগ করা সময়ে অ্যাস্টন ভিলার হয়ে গোলের সুযোগ তৈরি করেন ইয়ান মাটসেন, কিন্তু গোলমুখে থাকা পাচো সেটা ব্লক করে দিলে হতাশায় পোড়ে ভিলা পার্ক।
কোচ এমিরি তো মাটিতে শুয়েই পড়েন। শেষ পর্যন্ত এক গোল কমের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় অ্যাস্টন ভিলাকে। হতাশায় বেশ খানিকটা সময় মাঠেই বসেছিলেন মার্তিনেজ।
টানা দ্বিতীয়বার সেমিফাইনালে ওঠা পিএসজি শেষ চারে খেলবে আগামীকাল আর্সেনাল-রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে জয়ী দলের বিপক্ষে।