টানা ৭ জয়ে অপ্রতিরোধ্য রংপুর, চোখ এখনই যেন শিরোপায়!
খুলনাই হতে পারতো এবারের আসরের শীর্ষে থাকা রংপুর বধের প্রথম দল। সুযোগ ছিলো একদম নিশ্চিত। তবে সাইফুদ্দিনের ডেথ ওভারের তান্ডবে খুলনা টাইগার্সদের হাতের মুঠোয় থাকা জয় পিছলে চলে গেলো রংপুর রাইডার্সদের ঝুলিতে। ৭ ম্যাচের প্রত্যেকটিতে দাপিয়ে বেরানো রাইডার্সরা ঠিক যেন পাগলা ঘোড়ার প্রতিচ্ছবি…!
টস জিতে আজ প্রথমে ব্যাটিং করা রংপুরকে বড় সংগ্রহটা এনে দিয়েছেন দুই পাকিস্তানি ব্যাটার খুশদিল শাহ ও ইফতিখার আহমেদ। চতুর্থ উইকেটে ১১৩ রান যোগ করেন দুজনে। আসি আসি করেও ফিফটির দেখা না পাওয়া খুশদিল আজ পেয়েছেন। খেলেছেন ৩৫ বলে ৭৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। ইনিংসটি সাজিয়েছেন সমান ৪ চার ও ৬ ছক্কায়।
অন্যদিকে অ্যাঙ্করের ভূমিকা পালন করা ইফতিখার যদি শেষটায় ব্যাটিং ছন্দ ধরে রাখতে পারতেন তিনিও পেতে পারতেন এবারের বিপিএলে প্রথম ফিফটি। তা করতে না পারায় পেসার হাসান মাহমুদের এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ৪৩ রানে থামতে হয়েছে তাকে। ইনিংসে কোনো ছক্কা মারতে না পারা পাকিস্তান ব্যাটার হাঁকিয়েছেন ৫ চার।
তার আগে ওপেনার তৌফিক খানের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৪০ রানের জুটি গড়েন ইফতিখার। ৩৬ রানে তৌফিক আউট হলে সেই জুটি ভেঙে যায়।
তারপরেই দুই পাকিস্তানি ব্যাটারের সেই জুটি। এর আগে অবশ্য শুরুটা ভালো ছিল না রংপুরের। দলীয় ৩০ রানের সময় আউট হন দুই ব্যাটার স্টিভেন টেলর (১৩) ও সাইফ হাসান (৭)।
জবাব দিতে নেমে খুলনার উদ্বোধনী জুটিতে মোহাম্মদ নাঈম শেখ এবং ডারউইশ রাসুলি মিলে তুলেছেন ৩১ রান। ১৫ বলে ১৭ রান করে বিদায় নেন রাসুলি। নাঈমের সাথে যোগ দেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। নাঈম-মিরাজ মিলে চালিয়েছেন ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ৫৭ রান তুলেছে খুলনা, হারিয়েছে ১ উইকেট।
পাওয়ারপ্লে শেষেও চলেছে দুজনের তাণ্ডব। ব্যাট হাতে দারুণ সাবলীল ছিলেন তারা। নাঈম-মিরাজের ব্যাটে চড়ে ঠিকঠাক এগোতে থাকে খুলনা টাইগার্স।
ফিফটির পথে ছিলেন মিরাজ। তবে ছুঁতে পারেননি ফিফটিটা। দলের ৯২ রানের মাথাতে ২৪ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন অধিনায়ক। নাঈম অবশ্য ফিফটি ছুঁয়েছেন। দারুণ ব্যাটিংয়ে ক্রিজে কিছুটা সময় কাটিয়ে ৪১ বলে ৫৮ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলে দলের ১৩৭ রানের মাথাতে আউট হন নাঈম।
দুই সেট ব্যাটারকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় খুলনা। তবে আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ব্যাটে ঠিক পথে ছিল দল। জয়টাও মনে হচ্ছিল একদম হাতের নাগালে।
ইনিংসের একদম শেষ দিকে অল্প সময়ের মধ্যেই দুজনের বিদায়ে প্রচন্ড চাপে পড়ে যায় খুলনা। ১৫ বলে ২৯ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে আউট হন আফিফ, দলের রান ১৬৫। পরের ওভারে দলীয় ১৬৯ রানের মাথাতে আউট হয়েছেন অঙ্কন। ১২ বলে ১৫ রান করে বিদায় নিয়েছেন তিনি। দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে রংপুর।
শেষ ওভারে দরকার ছিল ১২ রান। মোহাম্মদ সাইফুউদ্দিনের করা ওভারটা থেকে ৩ রানের বেশি নিতে পারেনি খুলনা। ১৭৮ রানে থেমেছে খুলনা। ৮ রানে জিতেছে রংপুর।
রংপুর রাইডার্সের হয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন আকিফ জাভেদ। ২টি করে উইকেট তোলেন শেখ মেহেদী হাসান এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।