দক্ষিণ আফ্রিকার স্বপ্ন ভেঙে ফাইনালে নাইজেরিয়া
প্রতিশোধের বাসনা, ২৬ বছরের খরা ঘুচিয়ে ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন- কিছুই পূরণ হলো না দক্ষিণ আফ্রিকার। পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে দলটি ঘুরে দাঁড়ালেও টাইব্রেকারে পেরে উঠল না। তাদেরকে হারিয়ে আফ্রিকান নেশন্স কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিল নাইজেরিয়া।
কোত দি ভোয়ার বুয়াকেতে বুধবার প্রথম সেমি-ফাইনালের নির্ধারিত সময় ১-১ ড্রয়ে শেষ হয়। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও স্কোরলাইনে পরিবর্তন আসেনি। শেষে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জিতে শিরোপার মঞ্চে ওঠে ‘সুপার ঈগলস’ নামে পরিচিত দলটি।
নির্ধারিত সময়ের দুটি গোলই হয়েছে পেনাল্টি থেকে। উইলিয়াম ট্রোস্ট-একং প্রথমে তিনবারের চ্যাম্পিয়নদের এগিয়ে নেন। পরে একেবারে শেষ দিকে টেবোনো মোকোয়েনার গোলে সমতায় ফেরে ১৯৯৬ সালে নিজেদের একমাত্র শিরোপাটি জেতা দক্ষিণ আফ্রিকা।
১৯৯৮ সালে সবশেষ ফাইনালে উঠেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আর এবারের আগে তারা সবশেষ সেমি-ফাইনাল খেলেছিল ২০০০ সালের আসরে। সেবার এই নাইজেরিয়ার বিপক্ষে হেরে বিদায় নিয়েছিল তারা। সেই হারের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ পেয়েও পারল না তারা।
প্রথমার্ধের সেরা সুযোগটি পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় জোরাল শট নেন ফরোয়ার্ড এভিডেন্স মাকগোপা। ঝাঁপিয়ে কোনোমতে এক হাত দিয়ে জাল অক্ষত রাখেন গোলরক্ষক।
বিরতির পরও সমানতালে চলতে থাকে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। প্রথম এক ঘণ্টায় গোলের উদ্দেশে দুই দলই সমান ছয়টি করে শট নেয়, তার মধ্যে তিনটি করে ছিল লক্ষ্যে। কিন্তু ডেডলক আর ভাঙে না।
অবশেষে ৬৭তম মিনিটে দেখা মেলে গোলের। বিরতির আগে ও পরে একাধিক সুযোগ নষ্ট করা ভিক্টো ওসিমেন বল পায়ে দারুণভাবে তিন ডিফেন্ডারের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যান। ডি-বক্সে ডিফেন্ডার মোথোবি এমভালা তাকে ফেলে দিলে সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সফল স্পট কিকে দলকে এগিয়ে নেন নাইজেরিয়া অধিনায়ক ট্রোস্ট-একং।
নির্ধারিত সময়ের তখন আর কয়েক মিনিট বাকি। লড়াই নাটকীয় রূপ নেয়।
প্রতিপক্ষের একটি আক্রমণে রুখে দিয়ে প্রতি-আক্রমণ শানিয়ে জালে বল পাঠান ওসিমেন। তবে মুহূর্তেই তাদের উল্লাস থেমে যায়। নাইজেরিয়ার পাল্টা আক্রমণের শুরুতে তাদের ডি-বক্সে ফরোয়ার্ড পার্সি তাউ ফাউলের শিকার হওয়ার পেনাল্টির আবেদন করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ভিএআরের সাহায্যে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিকে বল জালে পাঠিঢে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার মিডফিল্ডার টেবোনো মোকোয়েনা।
অতিরিক্ত সময়ের ২৫তম মিনিটে নিজেদের ডি-বক্সের ঠিক বাইরে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন দক্ষিণ আফ্রিকার মিডফিল্ডার গ্র্যান্ট কেকানা। তবে প্রতিপক্ষ শিবিরের চেয়ে এক জন বেশি নিয়ে খেলার সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি নাইজেরিয়া।
ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে, যেখানে নায়ক নাইজেরিয়ার গোলরক্ষক স্ট্যানলি ওয়াবালি। প্রতিপক্ষের দুটি শট ঠেকিয়ে দেন তিনি। আর দলের শেষ শটে লেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড কেলেচি ইহেনাচো বল জালে পাঠাতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে সবশেষ ২০১৩ সালে শিরোপা জয়ীরা।
আগামী রোববারের ফাইনালে নাইজেরিয়া লড়বে কোত দি ভোয়া কিংবা ডিআর কঙ্গোর বিপক্ষে।