খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

বুধবার, ৩০শে অক্টোবর ২০২৪

শামার জোসেফের বীরত্বে উইন্ডিজের দুর্দান্ত জয়

ব্রিজবেনে রোমাঞ্চ ছড়ানো দিন-রাতের টেস্টে ৮ রানে জিতেছে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের দল। সিরিজে ফিরিয়েছে ১-১ সমতা। চতুর্থ দিন রোববার ২১৬ রান তাড়ায় ২০৭ রানে থেমেছে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস।

১৪৬ বলে এক ছক্কা ও ৯ চারে ৯১ রানে অপরাজিত ছিলেন স্মিথ। তাকে ছাপিয়ে গ্যাবা টেস্টের নায়ক শামার জোসেফ। ১১.৫ ওভারে ৬৮ রান দিয়ে ৭ উইকেট নেন এই পেসার। আগের ম্যাচে অভিষেকেও আলো ছড়ানো এই পেসারই জিতেছেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।

তৃতীয় দিন মিচেল স্টার্কের ইয়র্কার ছোবল দিয়েছিল শামার জোসেফের পায়ের অগ্রভাগে। আর ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি, মাঠ ছাড়েন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। স্ক্যান করাতে যেতে হয়েছিল হাসপাতালে। পরদিন তার মাঠে আসাই নিশ্চিত ছিল না। সেই তিনিই গড়ে দিলেন ব্যবধান। এক সেশনে নিলেন ৬ উইকেট। পরে জশ হেইজেলউডকে বোল্ড করে ১৯৯৭ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ক্যারিবিয়ানদের এনে দিলেন প্রথম জয়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাত্র চতুর্থ বোলার হিসেবে শামার জোসেফের সাত উইকেট নেওয়ার দিনে আদ্যন্ত ব্যাটিংয়ের কীর্তি গড়লেন স্মিথ। ওপেনার হিসেবে নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সিরিজে অবশেষে পেলেন রানের দেখা। তবে দারুণ লড়াইয়ের পরও শেষ পর্যন্ত দিন-রাতের টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম হার এড়াতে পারেননি। এতো দিন দলটির রেকর্ড ছিল ১১-০।

আগের তিন দিনও গোলাপী বলে লড়াই হয়েছিল তুমুল। তবে সেরাটা যেন দুই দল জমিয়ে রেখেছিল শেষের জন্য। জয়ের জন্য শেষ দুই দিন অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ১৫৬ রান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৮ উইকেট।

২ উইকেটে ৬০ রান নিয়ে দিন শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান স্মিথ ও ক্যামেরন গ্রিন এগিয়ে নিতে থাকেন স্বাগতিকদের। কেমার রোচ, আলজারি জোসেফ ও জাস্টিন গ্রিভসের বোলিং সামলে ২ উইকেটে ১১৩ রানের দৃঢ় ভিতের উপর দাঁড়ায় অস্ট্রেলিয়া।

ব্যথানাশক ইনজেকশন নিয়ে খেলতে নামা শামার জোসেফ জাদুকরী দুটি ডেলিভারিতে পাল্টে দেন খেলার চিত্র। একটু বাড়তি বাউন্স করা বলে গ্রিনকে বোল্ড করে ভাঙেন ৭১ রানের জুটি। পরের বলে ইয়র্কারে এলোমেলো করে দেন ট্রাভিস হেডের স্টাম্প! ‘কিং পেয়ার’ অর্থাৎ দুই ইনিংসেই গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ পেলেন হেড।

মিচেল মার্শকে ফেরানোর পর অ্যালেক্স কেয়ারিকেও বোল্ড করে দেন শামার জোসেফ। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় থাকা মিচেল স্টার্ককে ফিরিয়ে সিরিজে দ্বিতীয়বারের মতো নেন ৫ উইকেট। পরে প্যাট কামিন্সকে কট বিহাইন্ডকে করে ধরেন ষষ্ঠ শিকার।

৮ উইকেটে ১৮৭ রান নিয়ে ডিনারে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল আরও ২৯ রান। অন্যদের ফেরার মিছিলে স্মিথ লড়ছিলেন বিরুদ্ধ স্রোতে। তবে তাকে সঙ্গে দিতে পারছিলেন না কেউই। ডিনারের পরপরই ন্যাথান লায়নকে ফিরিয়ে তার কাজ আরও কঠিন করে তোলেন আলজারি জোসেফ।

তাকেই স্কুপ করে ছক্কা মারেন স্মিথ। কমাতে থাকেন ব্যবধান। পরের ওভারের চতুর্থ বলে সিঙ্গেল নিয়ে হেইজেলউডকে স্ট্রাইক দেন তিনি। কিন্তু দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে হেইজেলউডের স্টাম্প উড়িয়ে যেন আকাশে ডানা মেলে দেন শামার জোসেফ! রোমাঞ্চকর টেস্টে ঘটে রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৩১১

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ২৮৯/৯ ডিক্লেয়ার

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১৯৩

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২১৬) (আগের দিন ৬০/২) ৫০.৫ ওভারে ২০৭ (স্মিথ ৯১*, গ্রিন ৪২, হেড ০, মার্শ ১০, কেয়ারি ২, স্টার্ক ২১, কামিন্স ২, লায়ন ৯, হেইজেলউড ০; রোচ ১০-১-২৮-০, আলজারি জোসেফ ১৭-১-৬২-২, গ্রিভস ১২-০-৪৬-১, শামার জোসেফ ১১.৫-০-৬৮-৭)

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ রানে জয়ী

সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজ শেষ ১-১ সমতায়

ম্যান অব দা ম্যাচ: শামার জোসেফ

ম্যান অব দা সিরিজ: শামার জোসেফ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy