খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর ২০২৪

প্রথম সেমিফাইনালে চ্যালেঞ্জিং টার্গেটের সামনে কিউইরা

ভারতের অধিকাংশ শহরে শীতের পদধ্বনি পড়লেও ব্যতিক্রম মুম্বাই। আরব সাগরের মৃদুমন্দ বাতাস, মেরিন ড্রাইভের প্রশস্ত পথ মনকে প্রশান্তি দেবে। এদিকে বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের রথ লাগামহীনভাবে ছুটছে। লিগপর্বের নয় ম্যাচের সবকটিতে জয় পেয়ে সেমিফাইনালে রোহিত শর্মার দল। কিন্তু ২০১৯ সালের মত এবারও সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড হওয়ায় ওল্ড ট্রাফোর্ডের সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে নাকি বদলাবে সেটা দেখার অপেক্ষায় বিশ্ববাসী। প্রথম পর্বের ৯ ম্যাচের মধ্যে ৪ ম্যাচে টস জিতেছেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে অনুষ্ঠিত প্রথম সেমিফাইনালেও তার ব্যতিক্রম হয়নি, টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় অধিনায়ক।

ম্যাচের আগে ভারতের নকআউটের চাপ নিয়ে অনেক আলাপ-আলোচনা হলেও প্রথম ওভারেই সেসব ধুলোর সাথে মিশিয়ে দেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ট্রেন্ট বোল্টের ওভারে দুটি চার মেরেই বড় লক্ষ্যের বার্তা দেওয়া শুরু করেন কিউইদের। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই আগ্রাসী ভঙ্গিতে খেলা রোহিত এদিন আরও আক্রমণাত্মক রূপে দেখা দেন। রোহিতের ব্যাটে একের পর এক বাউন্ডারিতে মাত্র ৫.২ ওভারে পঞ্চাশ রান পেয়ে যায় ভারত। প্রথম পাঁচ ওভারে তিন ছক্কা মেরে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড, এক আসরে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড নিজের করে নেন। কিন্তু রোহিতের ঝড় থেমে যায় কিছুক্ষণ পর। টিম সাউদির স্লোয়ারে তুলে মারতে গিয়ে অর্ধশতক থেকে ৩ রান দূরে থেকেই আউট হয়ে যান ভারতীয় অধিনায়ক। ২৯ বলের ৪৭ রানের ইনিংসে মারেন ৪টি করে ছয় ও চার। ৭১ রানে রোহিতকে হারানো ভারত পাওয়ারপ্লেতেই এনে ফেলে ৮৪ রান। একশ পূর্ণ করতে ভারত নেয় মাত্র ৭৪ বল। একপাশে দর্শক বনে যাওয়া শুবমান গিল রোহিতের ফেরার পর তার ব্যাটিং কারিশমা দেখাতে শুরু করেন ওয়ান ডাউনে নামা রান মেশিন বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে। ৪১ বলে অর্ধশতক তুলে নেয়া গিল পরে আরও আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন। প্রথম ১০ ওভারে ৮৪ রান পাওয়া ভারত পরবর্তী ১০ ওভারে ৬৬ রান তুলে নেয়। কিন্তু বিশ্বকাপের এই আসরে প্রথম সেঞ্চুরির সুবাস পেতে শুরু করা গিলকে ৬৫ বলে ৭৯ রান করে মাঠ ছাড়তে হয় আউট না হয়েও, ক্র্যাম্প নাকি হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট জাতীয় কিছু সেটা বোঝা যায়নি। গিল বাদে ভারতের প্রথম পাঁচ ব্যাটসমেনদের সবাই সেঞ্চুরি পেয়েছেন চলতি বিশ্বকাপে।

গিলের পরে শ্রেয়াস আইয়ার ক্রিজে নামলেও ভারতের ইনিংসে ছন্দপতন হতে দেননি একটুও। ৫৯ বলে কোহলি ফিফটি পেয়ে যান। ২৮.১ ওভারেই দুইশ পূর্ণ করে ফেলে ভারত। ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে হিটিংয়ে অবিশ্বাস্য দক্ষতা দেখান আইয়ার। ছক্কার মারে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তার ইনিংস। ৩৫ বলে ফিফটি পেতে ৪টি ছয় হাঁকিয়ে ফেলেন। একপাশ আগলে রেখে খেলে যাওয়া কোহলি এগিয়ে যান সেঞ্চুরির পথে। ৪০ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ২৮৭ রান। কোহলি ঐতিহাসিক ৫০তম সেঞ্চুরি পেয়ে যান ১০৬ বলে। এই সেঞ্চুরি দিয়ে তিনি ব্যাটিং কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের সর্বোচ্চ ৪৯ টি ওয়ানডে সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙলেন। ১০৭ রানে জীবন পেয়ে গেলেও কোহলি শেষমেশ মুম্বাইয়ের দর্শকদের মাতিয়ে চলে যান ১১৭ রানে। ১১৩ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কা মেরে আউট হয়ে কোহলি যখন ফিরছেন, ভারতের সংগ্রহ তখন ৪৪ ওভারে ৩২৭ রান মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে।

শেষের ৬ ওভারে লোকেশ রাহুলকে নিয়ে ব্যাটিং তান্ডব চালায় শ্রেয়াস আইয়ার, ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরিটা করে ফেলেন মাত্র ৬৭ বলে। ৮ ছক্কা ও ৩ চারে ৭০ বলে ১০৫ রানে অসাধারণ ইনিংস খেলে এই ব্যাটসমেন ফিরে যান ৪৯তম ওভারে। সূর্যকুমার এসে দ্বিতীয় বলে আউট হয়ে গেলেও পাঁচে নামা রাহুল ২০ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। ফলে ৪ উইকেট খরচে ভারতে পেয়ে যায় ৩৯৭ রানের পাহাড়সম পুঁজি। ১০ ওভারে ১০০ রান দিয়ে কিউই বোলার সাউদি নেন ৩ উইকেট।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy