নাঈমের ফাইফারে চতুর্থ দিন শেষে জয়ের স্বপ্ন বাংলাদেশের
গল টেস্টের প্রথম তিন দিন ব্যাটারদের দাপটের আঁচই পাচ্ছিল সবাই। তবে বাঁধ সাধলেন নাঈম হাসান।
চাটগাঁইয়া তরুণ এই স্পিনারের ফাইফারে শক্ত অবস্থানে থেকেও পাঁচশ ছোঁয়া হলো না স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার। ফলে, চতুর্থ দিন শেষে জয়ের স্বপ্ন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের চোখেমুখে।
অন্যদিকে, ক্রমেই স্পিন ধরা উইকেটে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে কিছুটা চ্যালেঞ্জ থাকলেও শাদমান ও শান্তর ফিফটিতে আধিপত্য বিস্তার করে লিডটা বেশ বাড়িয়ে নিল বাংলাদেশ।
অনেকটাই ড্রয়ের পথে এগোতে থাকা এই ম্যাচের লাগামটা এখনো বাংলাদেশের হাতেই আছে।
গল টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর ৩ উইকেটে ১৭৭ রান, লিড ১৮৭ রানের। এর আগে শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে করতে পারে ৪৮৫ রান।
শ্রীলঙ্কা এই স্কোরে গুটিয়ে যাওয়ার পেছনে বড় অবদান রেখেছেন নাঈম।
ক্যারিয়ারের এর আগে কখনই বিদেশের মাটিতে পাঁচ উইকেট না পাওয়া এই অফ স্পিনার দিনের শুরু থেকেই পেয়েছেন টার্ন। নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেন্থ বজায় রেখে ব্যাটারদের চাপে রেখেছেন একপ্রান্ত থেকে।
আরেক স্পিনার তাইজুল ইসলাম অবশ্য সেভাবে কাজে লাগাতে পারেননি টার্ন।
এদিন নাঈমের প্রথম উইকেটে অবশ্য কৃতিত্ব বেশি পাবেন লিটন দাসই।
লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার ব্যাট ছুঁয়ে চোখের পলকেই চলে যায় তার গ্লাভসে। এরপর কুসাল মেন্ডিসের উইকেটেও দেখান কিপিংয়ের মুন্সিয়ানা।
হাসান মাহমুদের লেগ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়েছিলেন কুসাল, কানায় লেগে তার লেগ সাইড দিয়ে ছিল বাউন্ডারি হওয়ার পথেই।
তবে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে দুর্দান্ত এক ক্যাচে তাকে বিদায় করেন লিটন।
এরপর বাংলাদেশের বোলারদের চাপে ফেলে সপ্তম উইকেটে ৮৪ রান যোগ করেন কামিন্দু মেন্দিস ও মিলান রত্নেয়েকে মিলে।
ইনিংসে চমৎকার বল করা হাসান শেষ পর্যন্ত ভাঙেন এই জুটি, ৩৯ রানে রত্নেয়েকেকে বোল্ড করে।
এরপর বড় উইকেটটা পান নাঈম।
সেঞ্চুরির পথে থাকা কামিন্দু (৮৭ রান) উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান তিনি। ১৫ রানে শেষ চার উইকেট হারিয়ে ৪৮৫ তেই থামে শ্রীলঙ্কার ইনিংস। ১২১ রানে ৫ উইকেট নেন নাঈম।
প্রথম ইনিংসের মত দ্বিতীয় ইনিংসেও দলকে হতাশ করেন এনামুল হক বিজয়। অভিজ্ঞ এই ওপেনার শুরু থেকেই ছিলতা জড়তাগ্রস্ত।
প্রবাথ জয়াসুরিয়ার বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে করেন মাত্র ৪ রান। তবে আরেক ওপেনার শাদমান চাপ সরান ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে।
তবে এবারও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি মুমিনুল হক। অভিজ্ঞ এই ওপেনার সুইপ করতে গিয়ে ফেরেন ১৯ রানে।
লিড বেশ না হওয়ায় টার্নিং উইকেটে বাংলাদেশের সামনে তখন বিপদের শঙ্গা ছিলই কিছুটা।
তবে সাবলীল ব্যাটিংয়ে সেটা সামাল দেন শাদমান ও শান্ত মিলেন। ফিফটি পারে সেঞ্চুরির পথে থাকা শাদমানকে থামতে হয় ৭৬ রানে।
তবে মিলান রত্নানেয়েকের প্রথম শিকার হওয়ার আগে শান্তর সাথে যোগ করেন গুরুত্বপূর্ণ ৬৮ রান।
প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ায়ন শান্ত (৫৬*) ও মুশফিকুর রহিম (২২) মিলে অনায়াসেই পার করেন দিনের বাকি অংশ।
পঞ্চম দিনে ম্যাচের ফলাফল কোন দিকে যাবে, তা অনেকটাই নির্ভর করবে এই জুটির ওপর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
- বাংলাদেশ: ৪৯৫ অলআউট ও ৫৭ ওভারে ১৭৭/৩ (সাদমান ৭৬, নাজমুল ৫৬*, মুশফিক ২২*; থারিন্দু ১/১৩, জয়াসুরিয়া ১/৪৮, থারিন্দু ১/৫১)।
- শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ১৩১.২ ওভারে ৪৮৫ অলআউট (নিশাঙ্কা ১৮৭, কামিন্দু ৮৭, চান্ডিমাল ৫৪; নাঈম ৫/১২১)।
* ৪র্থ দিন শেষে বাংলাদেশ ১৮৭ রানে এগিয়ে।