বার্সার ৭-০ গোলের জয়ে রাফিনিয়ার হ্যাটট্রিক
রেয়াল ভাইয়াদলিদের বিপক্ষে ম্যাচ জুড়ে আক্রমণের ঝড় বইয়ে দিল বার্সেলোনা। গোলও মিলল মুড়ি-মুড়কির মতো। দারুণ এক হ্যাটট্রিক উপহার দিলেন রাফিনিয়া। লা লিগা শিরোপা পুনরুদ্ধারের অভিযানে শতভাগ জয়ের ধারা ধরে রাখল কাতালান দলটি। ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে শনিবার লিগ ম্যাচটি ৭-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা।
প্রথমার্ধে তিন গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া বার্সেলোনা বিরতির পর জালের দেখা পায় আরও চারবার। রাফিনিয়ার তিনটি ছাড়া একটি করে গোল করেন রবের্ত লেভানদোভস্কি, জুল কুন্দে, দানি ওলমো ও ফেররান তরেস। ওলমোর দুটি ও লেভানদোভস্কির একটি শট পোস্টে বাধা না পেলে ব্যবধান হতে পারত আরও বড়।
আসরে প্রথম চার ম্যাচেই জিতল হান্সি ফ্লিকের দল। আগের তিন ম্যাচেই জিতেছিল ন্যূনতম ব্যবধানে, ২-১ গোলে। এবার পরিপূর্ণ পারফরম্যান্স মেলে ধরে বড় জয় পেল তারা।
গোল না পেলেও ম্যাচ জুড়ে দারুণ খেলেন লামিনে ইয়ামাল। দুটি গোলে অবদান রাখেন ১৭ বছর বয়সী এই উইঙ্গার। দলের প্রথম চার ম্যাচেই অন্তত একটি গোল কিংবা অ্যাসিস্ট করলেন তিনি।
আগের ম্যাচে বদলি নেমে, অভিষেকে গোল করে দলকে জেতানো ওলমো এবার জায়গা পান শুরুর একাদশে। চতুর্থ মিনিটে গোলও পেয়ে যেতে পারতেন তিনি। ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে তার ডান পায়ের ভলি পোস্টে লাগে।
দশম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে রাফিনিয়ার জোরাল নিচু শট ভাইয়াদলিদ গোলরক্ষক ঠেকানোর পর কাছ থেকে জালে পাঠান ওলমো, কিন্তু অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। ২০ থেকে ২৪- চার মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে ম্যাচে চালকের আসনে বসে যায় বার্সেলোনা।
দুটি গোলেরই উৎস মাঝমাঠ। পাউ কুবার্সির উঁচু করে বাড়ানো বল ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন রাফিনিয়া। সঙ্গে লেগে থাকা প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
প্রায় একইরকমভাবে ইয়ামালের উঁচু করে বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে দ্বিতীয় গোলটি করেন লেভানদোভস্কি। চলতি আসরে চার ম্যাচে পোলিশ তারকার গোল হলো ৪টি। ৪১তম মিনিটে ব্যবধান বাড়তে পারত আরও, কিন্তু ওলমোর আরেকটি শট পোস্টে লাগে।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে স্কোরলাইন ৩-০ করেন কুন্দে। কর্নার ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় সফরকারীরা। বক্সের ভেতর থেকে ডান পায়ের শটে ওপরের কোণা দিয়ে বল জালে পাঠান ফরাসি ডিফেন্ডার।
এই অর্ধে গোলের জন্য ১৪টি শট নিয়ে ৫টি লক্ষ্যে রাখে বার্সেলোনা। বিপরীতে ভাইয়াদলিদের দুই শটের একটি লক্ষ্যে ছিল, যা অনায়াসে ঠেকান মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন।
৫৫তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ হারান ওলমো। বক্সে ইয়ামাল নিজে শট না নিয়ে বল দেন ওলমোকে, কিন্তু বলে পা-ই ছোঁয়াতে পারেননি তিনি। পরের মিনিটে ওয়ান-অন-ওয়ানে রাফিনিয়ার শট ফেরান গোলরক্ষক। একটু পর দুরূহ কোণ থেকে লেভানদোভস্কির শট পোস্টের বাইরের দিকে লাগে।
৬৪তম মিনিটে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলের দেখা পান রাফিনিয়া। বক্সে জটলার ভেতর থেকে লেভানদোভস্কির পা ছুঁয়ে আসা বল কাছ থেকে জালে পাঠান তিনি।
৭২তম মিনিটে তিনি পূর্ণ করেন হ্যাটট্রিক। পাল্টা আক্রমণে নিজেদের অর্ধ থেকে বল ধরে এগিয়ে গিয়ে পাস দেন ইয়ামাল। বক্সে ঢুকে প্রথম স্পর্শে বা পায়ের শটে গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন রাফিনিয়া।
ক্যারিয়ারে এই প্রথম হ্যাটট্রিকের স্বাদ পেলেন ২৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার। ৮২তম মিনিটে জালের দেখা পান ওলমো। বক্সের সামনে প্রতিপক্ষের তিন খেলোয়াড়ের মাঝ দিয়ে দারুণ ক্ষিপ্রতায় বল নিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েন তিনি, এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল পাঠান জালে।
তিন মিনিট পর ভাইয়াদলিদের জালে সপ্তম পেরেক ঠুকে দেন দ্বিতীয়ার্ধে লেভানদোভস্কির বদলি নামা তরেস। বাম দিক থেকে রাফিনিয়ার পাসে ছুটে গিয়ে বক্সে প্রথম স্পর্শে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বার্সেলোনা। তাদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে ৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ভিয়ারেয়াল। ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে আছে ভাইয়াদলিদ।