খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৪

পদত্যাগে আপত্তি নেই হাথুরুর

রাজনীতির পটপরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও (বিসিবি)। মিলছে বড় পরিবর্তনের বার্তা। এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস। বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানও নাকি সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। নতুন সভাপতির নামও শোনা যাচ্ছে। রাষ্ট্র ক্ষমতায় পালাবদলের ধাক্কায় সরে যেতে পারেন আরও কয়েকজন পরিচালক। অনেকেরই ধারণা পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলেও।

প্রধান কোচের পদ থেকে চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি বেশ আগেই উঠেছে। সেই দাবি এখন আরও জোরালো। অনেকেরই ধারণা- বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে যদি পরিবর্তন আসে, তা হলে পরিবর্তন আসবে প্রধান কোচের চেয়ারেও। বিষয়টা আঁচ করতে পারছেন হাথুরু নিজেও। তবে তিনি চিন্তিত নন। এই লঙ্কান বিষয়টা দেখছেন পেশাদারি দৃষ্টিতে। বাংলাদেশ দলে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে একেবারেই ভাবছেন না হাথুরু। যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নিতে প্রস্তত আছেন তিনি। বিসিবি চাইলে দায়িত্বে থাকবেন, না চাইলে চলে যাবেন আপন ঠিকানায়।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে টিম বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন হাথুরু। আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত বিসিবির সঙ্গে চুক্তি আছে তার। পাকিস্তানের মাটিতে অনুষ্ঠিত হবে আইসিসির মেগা আসরটি। দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ দলও এখন পাকিস্তানে। আগামীকাল রাওয়ালপিন্ডিতে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। ওই ম্যাচের জন্যই টাইগারদের প্রস্তুত করছেন হাথুরু। সোমবার তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমের। সেখানে নানান প্রসঙ্গে কথা বলেছেন টাইগার কোচ। জানিয়েছেন দলের সম্ভাবনার কথা, দলকে ঘিরে প্রত্যাশার কথা।

প্রসঙ্গক্রমেই উঠে আসে বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে হাথুরুর টিকে থাকার বিষয়টি। কেননা বিসিবি সভাপতির চেয়ারে নাজমুল হাসান পাপনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে যার নামটা সবথেকে বেশি শোনা যাচ্ছে, সেই ফারুক আহমেদ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন- তিনি দায়িত্ব নিলে জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে হাথুরুর টিকে থাকার কোনো কারণ দেখেন না। এরই জেরে ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন ছুটে যায় টাইগার কোচের দিকে। জবাবে তিনি বলেছেন, ‘আমার কোনো ধারণা নেই বাংলাদেশে (বিসিবিতে) কী চলছে। আমার ভবিষ্যতের কথা বললে- যতদিন পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ আছে, আমি দায়িত্ব পালনের দিকে দৃষ্টি রাখছি।’

বোর্ড যদি চায় মেয়াদ শেষের আগেই তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে, সে ক্ষেত্রে পদত্যাগে আপত্তি নেই হাথুরুর। এটাও পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি, ‘বোর্ড যদি বদলে যায় এবং তারা যদি পরিবর্তন চায়, আমার তাতে সমস্যা নেই। আবার তারা যদি আমাকে চালিয়ে নিতে বলে, আমাকে নিয়ে খুশি থাকে, আমিও খুশি মনে দায়িত্ব পালন করব।’

আপাতত তার মনোযোগ প্রথম টেস্টের দিকে। এই টেস্টে এবং সিরিজে ভালো কিছু করে এমন অস্থির সময়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের স্বস্তি উপহার দিতে চান তিনি, ‘মানুষকে ঐক্যবদ্ধ ও আশাবাদী করার ক্ষমতা খেলাধুলার আছে। এই ম্যাচটি ভালো খেলতে পারলে অবশ্যই সেটা বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মানসিকভাবে অনেক সাহায্য করবে।’

রাওয়ালপিন্ডির উইকেট হবে পেসবান্ধব। সে কারণেই চার পেসার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে পাকিস্তান। এমন পেসবান্ধব উইকেটের চ্যালেঞ্জ নিতে হাথুরু প্রস্তুত। দলের সবকিছু ঠিকঠাকই দেখছেন তিনি, ‘রাওয়ালপিন্ডির উইকেট দেখে মনে হচ্ছে, তুলনামূলক পেসবান্ধব এবং ব্যাটিংয়ের জন্যও ভালো। তাদের স্কোয়াডেও দেখা যাচ্ছে…। বিষয়টা হলো সম্প্রতি আমরাও ভালো ফাস্ট বোলার তৈরি করেছি। কন্ডিশন সাহায্য করলে আমাদের যথেষ্ট ভালো বোলার আছে। দুজন স্পিন অলরাউন্ডার আছে। সাকিব আল হাসান ও মিরাজ তারা বিশ্বমানের। এই মুহূর্তে আমাদের প্রায় সবদিকই ঠিক আছে।’

টাইগার পেসারদের নিয়েই হাথুরুর রোমাঞ্চটা বেশি। তবে ব্যাটিং নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা আছে। সেটা অস্বীকারও করেননি তিনি। তবে উইকেট আশা দেখাচ্ছে তাকে, ‘পাকিস্তানের উইকেট সাধারণত ব্যাটিং সহায়ক হয়। ব্যাট-বলে দারুণ লড়াই হয়।’ আগামীকাল শুরু হবে এই লড়াই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- হাথুরুর মধ্যে শিষ্যদের লড়াকু করে তোলার সেই স্পৃহা থাকবে তো? দলের কোচ হিসেবে ভবিষ্যৎ যখন অনিশ্চিত, তখন আসলে অমন স্পৃহা দেখানো কঠিন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy