দ্রুততম মানবীর মুকুট জিতে ইতিহাস গড়লেন জুলিয়েন
ট্র্যাকে নেমে ঝড় তুললেন জুলিয়েন আলফ্রেড। তার গতির কাছে হার মানতে হলো বাকি সবাইকে। প্যারিস অলিম্পিকে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতে সেন্ট লুসিয়ার এই স্প্রিন্টার জানান দিলেন, তিনি এখন বিশ্বের দ্রুততম মানবী। জুলিয়েন গলায় তুললেন সোনার পদক, দেশের হয়ে লিখলেন ইতিহাসও।
বৃষ্টিস্নাত দিনে স্তাদে দে ফ্রান্সে নারীদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে চোখ ছিল ক্রীড়াপ্রেমীদের। অলিম্পিকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় এই ইভেন্টে ১০.৭২ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরা হন ২৩ বছর বয়সী জুলিয়েন। অলিম্পিক গেমসে নিজেদের ইতিহাসে যেকোনো ইভেন্টে দেশকে প্রথম পদক এনে দিলেন তিনি।
১০০ মিটারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের তারকা স্প্রিন্টার শ’কারি রিচার্ডসনকে হতবাক করে দিয়ে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জেতেন জুলিয়েন। দৌড়ের শুরু থেকেই রিচার্ডসনের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন তিনি। ১০.৮৭ সেকেন্ড সময় নেওয়া রির্চাডসন জেতেন রৌপ্য পদক। যুক্তরাষ্ট্রের আরেক স্প্রিন্টার মেলিসা জেফারসন ১০.৯২ সেকেন্ড সময় নিয়ে ব্রোঞ্জ জেতেন।
২০২৩ সালে হারানো বাবাকে স্বর্ণ পদক উৎস্বর্গ করেছেন জুলিয়েন। অলিম্পিক স্বপ্নের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাবা বিশ্বাস করতেন একদিন আমি স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো। গত বছর তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় মুহূর্তটি তিনি দেখে যেতে পারেননি। কিন্তু আমি জানি, তিনি যেখানেই থাকুন না কেন, অলিম্পিয়ান মেয়েকে দেখতে পেয়ে খুশি হয়েছেন।’
এরপর ছোটবেলার সংগ্রামের গল্পও বলেন জুলিয়েন। দৌড়ানোর জুতা-পোশাক ছিল না তার। স্কুলের ইউনিফর্ম পরেই নেমে পড়তেন ট্র্যাকে। দৌড়ানো যায়, এমন জায়গা মিললেই দৌড় শুরু করতেন জুলিয়েন। বিশ্ব জয়ের পর সেই স্মৃতি মনে করে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় আমার কোনো রানিং কেডস ছিল না। স্কুলের পোশাক পরে আমি দৌড়ে অংশ নিতাম, সব জায়গায় দৌড়ানোর চেষ্টা করতাম।’
তার বিজয়ে সেন্ট লুসিয়ার ট্র্যাক এন্ড ফিল্ডের সুযোগ-সুবিধার উন্নতি হবে, এমনই বিশ্বাস জুলিয়েনের, ‘আমাদের সুযোগ-সুবিধা বেশ সীমিত। নির্ধারিত কোনো স্টেডিয়াম আমাদের জন্য বরাদ্দ নেই। আমি সত্যিকার অর্থেই আশা করছি এই স্বর্ণ পদক দেশের তরুণদের উৎসাহিত করবে ও সেন্ট লুসিয়ায় একটি নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণে সহায়তা করবে। মনে প্রাণে আশা করি, সেন্ট লুসিয়ায় যেন অ্যাথলেটিকসের উন্নতি হয়।’