খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

বুধবার, ১৭ই ডিসেম্বর ২০২৫

দুই দশক পর অলিম্পিকের মহাসচিব পদে সাবেক ক্রীড়াবিদ

১৯৭৬ সালে গঠিত হওয়া অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ৪৯ বছরে সাত জন মহাসচিব পেয়েছিল। দুই দশক পর অলিম্পিকের মহাসচিব পদে ফিরলেন সাবেক ক্রীড়াবিদ।
আজ বিকেলে বিওএ ভবনে অষ্টম মহাসচিব হিসেবে সাবেক জাতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় ও ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জোবায়েদুর রহমান রানা মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম শীর্ষ সংগঠন। বিওএ মহাসচিব পদটি বেশ মর্যাদার ও গুরুত্বের।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের গঠন।

১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ অলিম্পিক গেমসও (যা এখন বাংলাদেশ গেমস নামে পরিচিত) আয়োজন হয়েছিল। ১৯৮০ সাল থেকে অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির স্বীকৃতি পেয়েছে।
বিওএ ওয়েবসাইট এবং বিওএ ভবনে সেক্রেটারি জেনারেল কর্ণারে সাত জন মহাসচিবের ছবি ও তথ্য পাওয়া গেছে।

১৯৭৯-৮১ সালে মোঃ শাজাহান অলিম্পিকের মহাসচিব ছিলেন।
এরপর এক দশক এই পদে ছিলেন ক্যাপ্টেন সিদ্দিক আহমেদ। ক্রীড়াঙ্গনে অলিম্পিকের মহাসচিব হিসেবে তার বিশেষ পরিচিতি ছিল।
কিংবদন্তী ক্রীড়াবিদ বশির আহমেদ ১৯৯২-৯৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন।

তার উত্তরসূরি হন সাবেক ভলিবল খেলোয়াড় ও তৎকালীন ভলিবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কুদ্দুুস চৌধুরি। যিনি ক্রীড়াঙ্গনে ভলিবলের বাবু ভাই নামেই বেশি পরিচিত।

তারপর ক্রীড়াঙ্গনের আরেকজন বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক জাফর ইমাম মহাসচিব ছিলেন।

এরপর দুই মেয়াদে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ক্রীড়া সংগঠক কুতুব উদ্দিন আহমেদ দায়িত্ব পালন করেন।
কুতুব উদ্দিনের স্থলাষিভিক্ত হন সৈয়দ শাহেদ রেজা। যিনি অলিম্পিকে মহাসচিব পদে সর্বাধিক সাড়ে তের বছর ছিলেন।
আজ তার স্থলাষিভিক্ত হয়েছেন জোবায়েদুর রহমান রানা।

দুই দশক পর অলিম্পিকের মহাসচিব পদে ফিরলেন সাবেক জাতীয় খেলোয়াড়। নিজে ক্রীড়াবিদ হওয়ায় ক্রীড়াবিদদের সমস্যা-সম্ভাবনা ভালোই জানা রানার।
ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম শীর্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হওয়ার পর রানার মন্তব্য,

‘ক্রীড়াবিদ হিসেবে অবশ্যই ক্রীড়াবিদদের পাশে থাকার চেষ্টা করব সব সময়। ক্রীড়াবিদরাই ক্রীড়াঙ্গনের প্রধান অংশ। তবে আজকের এই অবস্থানে আসার জন্য আমাকে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক দক্ষতাও অর্জন করতে হয়েছে। ক্লাব, ফেডারেশন, অলিম্পিকে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজের পর এখানে এসেছি।’

অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কাজ মূলত গেমস নিয়ে।

২০১৬ সালের আগে বাংলাদেশ অলিম্পিক গেমসে ওয়াইল্ড কার্ডে অংশগ্রহণ করেছে। রিও, টোকিও’র পর প্যারিস অলিম্পিকে বাংলাদেশ টানা তিন বার সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।

অলিম্পিকের মঞ্চে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চান নতুন মহাসচিব,

‘বিগত কমিটি যে কাজগুলো করেছে, আমরা সেটার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই ক্রীড়াঙ্গন উন্নয়নের চেষ্টা করব। আমাদের সভাপতি অলিম্পিকের ভিলেজ নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছেন। যে কোনো কিছু শুরু করা কঠিন, এটা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে, আশা করি ভালোভাবেই শেষ হবে।’

৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোতে রদবদল হয়েছে। এক পক্ষের অনুপস্থিতিতে আরেক পক্ষ দায়িত্ব নিয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রে।

অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায়ী মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা নতুন মহাসচিব রানার কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

বিদায়ী মহাসচিব শাহেদ রেজার রানার প্রতি পরামর্শ,

‘খেলাধূলা উন্নয়নের জন্য অনুশীলন দরকার। নতুন কমিটির কাছে পরামর্শ থাকবে ট্রেনিংয়ে যেন গুরুত্ব দেয়।’

অলিম্পিকের মহাসচিবদের মধ্যে শাহেদ রেজাই সবচেয়ে বেশি সময় ছিলেন। বিদায় বেলায় কোনো আক্ষেপ কিংবা অতৃপ্তির প্রশ্নে শাহেদ রেজা বলেন,

‘কোনো আক্ষেপ নেই, তৃপ্তি নিয়েই বিদায় নিচ্ছি। সুন্দর নেতৃত্ব এসেছে অলিম্পিকে তারা আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। দশ বছরের বেশি সময় বাংলাদেশ গেমস ছিল না, আমাদের সময়ে করেছি। প্রথমবারের মতো যুব গেমস। বিভিন্ন গেমসে পদক ও সাফল্য এসেছে।’

আজকের দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসেছিলেন সদ্য বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি শেখ বশির আহমেদ মামুন। তিনিও নতুন কমিটির উপর আস্থা রাখতে চান,

‘রানা তরুণ, অলিম্পিক ও গেমসে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই কমিটির অনেকেই ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পৃক্ত, ভালো কিছুই হবে।’

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy