ভারতের আগ্রহে এই মুহূর্তে রাজি নয় আইসিসি
সাউদাম্পটন এবং ওভালের পর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সবশেষ ফাইনাল হয়েছে লর্ডসে। তিনটি ফাইনালের ভেন্যুই ছিল ইংল্যান্ডে। ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সংস্করণের পরবর্তী তিন ফাইনাল আয়োজন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল ভারত। তবে নানা দিক বিবেচনায় ভারতের আগ্রহে এই মুহূর্তে রাজি নয় আইসিসি।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরবর্তী তিন আসরের ফাইনাল আয়োজনের স্বত্বও ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডকেই (ইসিবি) দিতে চলেছে আইসিসি।
টেস্ট ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করে তুলতেই আয়োজন করা হচ্ছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ।
২০২১ সালে প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কেন উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ড।পরের চক্রে ২০২৩ সালে শিরোপা ঘরে তোলে অস্ট্রেলিয়া।
কেইন উইলিয়ামসন, প্যাট কামিন্সের পর তৃতীয় অধিনায়ক হিসেবে ২৭ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে আজ (১৪ জুন, শনিবার) টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক গদা (মেস) হাতে তুলেছেন টেম্বা বাভুমা।
লর্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকা–অস্ট্রেলিয়া ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ২০২৩–২৫ চক্রের আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। ১৭ জুন বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কা গল টেস্ট দিয়ে শুরু হবে ২০২৫–২৭ চক্রের আসর।
২০ জুন হেডিংলিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামবে ভারতও। এটিও নতুন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের অংশ।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নিয়ম অনুযায়ী অংশগ্রহণকারী দলগুলো একে অপরের দেশে হোম–অ্যাওয়ে ভিত্তিতে ম্যাচ খেলে থাকে। তবে ফাইনাল হয়ে আসছে ইংল্যান্ডে।
নতুন আসর শুরুর আগে পরের তিন চক্রের ফাইনালের ভেন্যু নির্বাচন করতে ব্যস্ত আইসিসি। আগামী মাসেই তিন ফাইনালের ভেন্যু কিংবা দেশের নাম ঘোষণা করতে পারে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
অন্যদের মতো আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আয়োজন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)।
টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ক্রিকেটীয় নানা দিক বিবেচনা করে ভারতকে স্বত্ব দিতে খুব বেশি আগ্রহী নয় আইসিসি। তাদের সবার পছন্দের তালিকায় সবার উপরে ইংল্যান্ড।
ইতিমধ্যে নাকি ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডকে (ইসিবি) মৌখিকভাবে জানিয়েও দিয়েছে আইসিসি।
তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী মাসেই আসতে পারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। এমনটা হলে ২০২৭, ২০২৯ এবং ২০৩১ সালের ফাইনালও হবে ইংল্যান্ডেই।
ভারতের আগ্রহী আইসিসি রাজী না হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণও দেখিয়েছে তারা।
নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে ইংল্যান্ডের গ্রহণযোগ্যতা থাকায় পিছিয়ে গেছে ভারত। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী, জুনে অনুষ্ঠিত হয় ফাইনাল।
ওইদিকে মার্চ-মে সময়ে ভারতে আয়োজিত হয় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। যার ফলে আইপিএল শেষেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আয়োজন করতে হবে বিসিসিআইকে।
এদিকে জুনে ইংল্যান্ডের আবহাওয়া ভালো থাকায় বিবেচনা করা তাদের। পাশাপাশি বেশিরভাগ টেস্ট খেলুড়ে দেশের সঙ্গে টাইম জোন মিলে যাওয়ায় ব্রডকাস্টারদের জন্য লাভজনক হয়ে উঠে।
সবচেয়ে বড় কারণ টিকিট বিক্রির বিষয়টি। ইংল্যান্ডে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ থাকায় কোন দুই দল ফাইনালে গেছে সেটার উপর টিকিট বিক্রি খুব বেশি প্রভাব ফেলে না।
সাউথ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার ফাইনালের প্রথম তিনদিনে ৭৫ হাজার দর্শক এসেছে। ফাইনালে ভারত না উঠলে দর্শক উপস্থিতি ইংল্যান্ডের মতো হবে কি না সন্দেহ।
আবার প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এখন অস্বস্তিকর। দুই দেশের ক্রিকেট দলই একে অপরের দেশে যায় না।
পাকিস্তান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠলে সেটি আইসিসির জন্য হয়ে উঠতে পারে নতুন মাথাব্যথা।
সব মিলিয়েই ভারতের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল আয়োজনের আগ্রহে এই মুহূর্তে ‘হ্যাঁ’ নেই আইসিসির।