সিঙ্গাপুরের নাভিশ্বাস তুলেও বাংলাদেশের হতাশার হার
দর্শকদের প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়া। হামজা চৌধুরী, সমিত সোম, ফাহামিদুল ইসলামের মতো তারকা ফুটবলারদের নিয়ে সাজানো বাংলাদেশ দলকে ঘিরে ছিল অন্যরকম উত্তেজনা। কিন্তু আশা জাগিয়েও পয়েন্ট উদ্ধার করতে পারেনি স্বাগতিকরা।
জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সিঙ্গাপুরের নাভিশ্বাস তুলেও ২-১ গোলে বাংলাদেশকে হতাশার হার মেনে নিতে হয়েছে।
চার দিন আগে ভুটানকে হারিয়ে মাঠে ফিরেছিল বাংলাদেশ ফুটবল। সেই জয় কিছুটা আশাবাদী করেছিল ফুটবলপ্রেমীদের।
কিন্তু সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে সেই ছন্দটা হারিয়ে যায়।
গ্যালারিভর্তি দর্শক, রাতের আলোয় ঝলমলে স্টেডিয়াম—সবকিছু ছিল প্রস্তুত এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য, কিন্তু ম্যাচ শেষে ফিরেছে হতাশা।
সিঙ্গাপুরকে শুরু থেকেই সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা। তবে গোলের ভালো সুযোগ তৈরির দিক দিয়ে এগিয়ে ছিল সফরকারীরা।
সিঙ্গাপুর ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে যেতে পারত।
হ্যারিস স্টুয়ার্টের লং থ্রো নিয়ন্ত্রণে নিতে চেয়েও পারেননি বাংলাদেশ গোলকিপার মিতুল মারমা। সে সুযোগে জর্ডানের হেডে বল পেয়ে যান সং উই ইয়াং।
কিন্তু গোলের অল্প দূরত্ব থেকে শট নিয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।
৩১ মিনিটে সিঙ্গাপুরের ফরোয়ার্ড ইখসান ফান্দির শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন মিতুল মারমা।
তবে প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময়ের যখন আর মোটে মিনিটখানেক বাকি, তখনই বাংলাদেশের জালে বল জড়ান সিঙ্গাপুরের নাম্বার সেভেন সং উই ইয়ং।
হ্যারিসের ক্রসে ডান পায়ের ভলিতে জাল কাঁপান সিঙ্গাপুরের এই ফরোয়ার্ড। এই গোলের সুবাদে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় তারা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে কিছুটা রয়েসয়ে খেলে বাংলাদেশ।
সে সুযোগে ৫৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সিঙ্গাপুরের নাম্বার নাইন ইখসান ফান্দি।
বক্সের বাইরে থেকে হামি শিয়াহিনের শট মিতুল মারমা ঠেকিয়ে দিলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি । বল চলে যায় সুযোগ সন্ধানী ইখসান ফান্দির দিকে।
মোহাম্মদ হৃদয়ের পায়ের ফাঁক দিয়ে মাটি কামড়ানো শটে গোল করেন এই ফরোয়ার্ড।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় মরিয়া হয়ে ঝাঁপায় বাংলাদেশ।
একের পর এক আক্রমণের ফলশ্রুতিতে ৬৭ মিনিটে ম্যাচে প্রথম সাফল্য পায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
হামজা চৌধুরীর পাস ধরে বক্সের বাইরে থেকে মাটি কামড়ানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন রাকিব হোসেন।
এই গোলের পর থেকে শেষ বাঁশি পর্যন্ত বাংলাদেশ রীতিমত ঘাঁটি গেড়েছিল সিঙ্গাপুরের অর্ধে। বদলি আল আমিন, ফয়সাল ফাহিমদের সঙ্গে হামজারা একের পর এক আক্রমণ করেছেন।
কখনো সেট পিসের সুযোগে, আবার কখনো একক প্রচেষ্টায় সিঙ্গাপুরের বক্সে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা।
কিন্তু ফিনিশিংয়ের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত হার সঙ্গী করেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে হামজা-শমিতদের।


