রোমাঞ্চকর ড্রয়ে সান সিরোতে বায়ার্নকে বিদায় করে সেমিতে ইন্টার মিলান
ইন্টার মিলান ২ (৪)–(৩) ২ বায়ার্ন মিউনিখ
গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর ৯ মিনিটের মধ্যে গোলের দেখা মিলল তিনটি। পরে আরেকটি। তাতে উত্তেজনা ফিরল লড়াইয়ে। তবে প্রথম লেগের ফলই গড়ে দিল পার্থক্য। রোমাঞ্চকর ড্রয়ে বায়ার্ন মিউনিখকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে উঠল ইন্টার মিলান।
আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় প্রথম লেগে বায়ার্ন মিউনিখকে ২–১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালের পথে এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছিল ইন্টার মিলান। নিজেদের মাঠ সান সিরোতে ইন্টারকে আজ তাই ড্র করলেই চলত।
ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ড্র–ই হয়েছে। প্রথমার্ধ গোল বন্ধ্যাত্বে কাটলেও দ্বিতীয়ার্ধ ছিল রোমাঞ্চে ঠাসা। ২–২ সমতায় শেষ হওয়া ম্যাচের গোল চারটি হয়েছে বিরতির পর ২৪ মিনিটের ব্যবধানে।
এতে দুই লেগ মিলিয়ে ৪–৩ অগ্রগামিতায় সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছে ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার। জার্মানির সফলতম ক্লাব বায়ার্নকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বিদায়ের বেদনা নিয়ে।
চ্যাম্পিয়নস লিগের তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ইন্টার সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে স্প্যানিশ পরাশক্তি বার্সেলোনাকে।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলতে থাকে শুরু থেকে। প্রথম তিন মিনিটে দুই দলেরই একটি করে প্রচেষ্টা প্রতিহত হয় রক্ষণে। ষষ্ঠ মিনিটে প্রথমবার গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে পারে বায়ার্ন; টমাস মুলারের নিচু শট ঠেকান ইয়ান সমের।
নবম মিনিটে প্রথম শট লক্ষ্যে রাখতে পারে ইন্টার। বক্সের বাইরে থেকে ফেদেরিকো দিমার্কোর প্রচেষ্টা রুখে দেন গোলরক্ষক ইয়োনাস উরবিগ।
প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আক্রমণে দাপট দেখালেও পরিষ্কার কোনো সুযোগ অবশ্য তৈরি করতে পারেনি বায়ার্ন। বেশ কয়েকটি ‘হাফ চান্স’ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে বায়ার্নকে এগিয়ে নিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন ২-২ করেন কেইন। স্বাগতিকরা হেডে বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হওয়ার পর লেয়ন গোরেৎস্কা বল পেয়ে বক্সে খুঁজে নেন ইংলিশ স্ট্রাইকারকে।
এক ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে নিচু শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি। একটুও নড়ার সুযোগ পাননি গোলরক্ষক।
এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে কেইনের গোল হলো ১১টি।
বায়ার্নের সেই স্বস্তি বেশিক্ষণ থাকেনি। ৫৮ থেকে ৬১, এই তিন মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে ম্যাচে ২-১ ও দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ইন্টার।
প্রথম গোলটি করেন লাওতারো মার্তিনেজ। কর্নারে এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের মাথা ছুঁয়ে বল বায়ার্নের এক ডিফেন্ডারের পায়ে বাধা পাওয়ার পর, জোরাল শটে জাল খুঁজে নেন তিনি।
ইন্টারের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা পাঁচ ম্যাচে গোলের কীর্তি গড়লেন মার্তিনেজ।
এরপর বক্সের বাইরে থেকে মাত্তেও দারমিয়ানের জোরাল শট গোললাইনে প্রতিহত হওয়ার পর, ওই কর্নারেই হেডে গোল করেন পাভার্দ।
৭৬তম মিনিটে লড়াইয়ে আবার উত্তেজনা ফেরায় বায়ার্ন। কর্নারে হেডে ম্যাচে ২-২ সমতা টানেন ডায়ার।
তখন এক গোলের ঘাটতি পুষিয়ে উঠতে ইন্টারের ওপর চাপ বাড়ায় বায়ার্ন। শেষ দিকে তো খেলা হয় ইন্টারের অর্ধেই।
ছয় মিনিট যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে দারুণ সুযোগও পেয়ে যায় সফরকারীরা। কিন্তু মুলারের হেডে জোর ছিল না তেমন, সেভ করে ইন্টারকে রক্ষা করেন সমের।
একেবারে শেষ মুহূর্তে কিংসলি কোমানের শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার পরই শেষের বাঁশি বাজান রেফারি। উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা সান সিরো।