‘এক’ ম্যাচে নিষিদ্ধ তাওহীদ হৃদয়; জরিমানা এবাদতের
গতকাল সেরা আম্পায়ারের পুরস্কার পেয়েছিলেন আইসিসি এলিট প্যানেলের শরফুদ্দৌলা ইবনে সৈকত। আর আজ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) তার দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ সোচ্চার হন মোহামেডানের অধিনায়ক তাওহিদ হৃদয়। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে আগ্রাসী আচরণ করায় এক ম্যাচে নিষিদ্ধ হয়েছেন মোহামেডানের অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়।
আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ মানেই ঐতিহ্য় আর নিজেদের প্রমাণের লড়াই। ঢাকা ডার্বি নামে খ্যাত এই দ্বৈরথ স্বাভাবিকভাবে তর্ক-বিতর্কেও ঠাসা থাকবে। সেটাই দেখা গেল চলমান ডিপিএলের এবারের আসরের ম্যাচেও। শনিবার (১২ এপ্রিল) মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দল। যেখানে জয় তুলে নিয়েছে মোহামেডান দল।
ব্যাটিংয়ে আবাহনী এবং প্রায় শুরু থেকেই আম্পায়ারদের চাপে রাখে ফিল্ডিং দল মোহামেডান। ম্যাচের পঞ্চম ওভারে মোহামেডানের মেহেদি হাসান মিরাজের পঞ্চম বলটি আবাহনীর ব্যাটার পারভেজ হোসেন ইমনের পায়ে লাগে। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় তা লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে আঘাত করেছে।
কিন্তু মাঠে তো আর রিপ্লে দেখার সুযোগ নেই। মোহামেডান ক্রিকেটাররা আউটের জোরালো আপিল করেন। আম্পায়ার নাকচ করে দেন। ওদিকে বারবার মাথা নেড়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মোহামেডান অধিনায়ক।
এরপর ঘটনা আরো তীব্র রূপ নেয় অষ্টম ওভারে। এবাদত হোসেনের প্রথম বলটি মোহাম্মদ মিঠুনের পায়ে লাগে। রিপ্লেতে দেখা যায় বল অফস্ট্যাম্পের বাইরে ছিল।
কিন্তু এবাদত সহ মোহামেডানের ক্রিকেটাররা আউটের জোরালো দাবি তুলে চাপ সৃষ্টি করেন আম্পায়ার তানভীর আহমেদের ওপর। তিনি সাড়া না দিলে মোহামেডানের খেলোয়াড়রা নাখোশ হস। পরিস্থিতি সামাল দিতে এক পর্যায়ে আম্পায়ার সৈকত এগিয়ে এসে সবাইকে খেলায় ফিরতে বলেন।
কিন্তু মিড অন থেকে লেগ আম্পায়ার সৈকতকে আঙ্গুল উঁচিয়ে কিছু বলছিলেন হৃদয়। হেঁটে হেঁটে দুজনই কাছাকাছি চলে আসেন এবং তাদের তর্ক বাড়তে থাকে। ওই সময় মিরাজ এসে হৃদয়কে দূরে সরান আর মুশফিকুর রহিম সৈকতকে তার জায়গার দিকে নিয়ে যান।
ম্যাচ জেতার পরও যেন হৃদয়ের মাঠের উত্তেজনা এতটুকু কমেনি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আম্পায়ারদের ওপর নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন,
“যেটা ঘটেছে সবকিছু এক্সপ্লেইন করতে পারবো না কিন্তু হিট অব দ্য মোমেন্টে অনেক কিছু হয়। তারাও ভুল করে কিন্তু আমার কাছে যেটা মনে হয় তারা ভুল করতেই পারে, মানুষ মাত্রই ভুল করে আমরাও করবো!
কিন্তু আমার কাছে মনে হয় ভুলটা স্বীকার করা উচিত, আমি যদি ভুল করি আমিও স্বীকার করবো। কিন্তু আপনি যদি ভুল স্বীকার না করে বলেন এটা ভুল না তাহলে হবে না।”
আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক করার বিষয়টি সামনে এলে মুখ খোলার হুমকিও দেন হৃদয়। আম্পায়ার সৈকতের নাম উল্লেখ না করেই বলেন,
“সে আন্তর্জাতিক আম্পায়ার তাকে আমরা সম্মান করি, আমরাও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। এখানে যারা ছিল বেশিরভাগই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে সো, এমন ম্যাচে দুই-একটা ডিসিশন অনেক বড় ব্যবধান গড়ে দিতে পারে। যদি আবার হিতে অন্যদিকে যায় আমি মুখ খুলবো ইনশাল্লাহ।”
যদিও ম্যাচ রেফারি নিয়ামুর রশিদ রাহুলের সামনে শুনানিতে নিজের দোষ অবশ্য মেনে নিয়েছেন হৃদয়। তাই শাস্তি কমে মাত্র এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা হয়।
এছাড়া এবাদত হোসেনকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা ও তিনটি ডি মেরিট দেওয়া হয়।
শুনানিতে যাওয়ার আগে এক কথায় দেশের আম্পায়ারদের দিকে আঙুল তুলেছেন মোহামেডান অধিনায়ক,
“আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তো এমন অনেক দেখেছি। ডোমেস্টিকে তো এর চেয়ে আরও বাজে হতো, এখন তো সেটাও হয় না। ডে বাই ডে আমরা খেলোয়াড়রা তাদের অনেক রেস্পেক্ট করি, শুধু আমাদের খেলোয়াড়দের দোষ দিলে হবে না।
আপনারা দেখেন আমাদের আম্পায়ার তাদের ডিপার্টমেন্ট দেখেন তারাও ২-১ জন বাদে যে খুব ভালো করে এমন নয়। জাস্টিফাই করলে আমার কাছে মনে হয় দুই পাশ থেকেই দেখা উচিত।”