ভিনিসিয়ুসের শেষ মুহূর্তের দুর্দান্ত গোলে রোমাঞ্চকর জয় পেল ব্রাজিল
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের টেবিলে দরিভাল জুনিয়রের শিষ্যদের ছিল বেগতিক অবস্থান। ইনজুরিপ্রবণ স্কোয়াড নিয়ে নেমে তারা আরও ত্রাহি দশায় পড়ে। তবে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের শেষ মুহূর্তের দুর্দান্ত গোলে রোমাঞ্চকর জয় পেল ব্রাজিল।
সাম্প্রতিক সময়ে লাতিন আমেরিকার অন্যতম পরাশক্তিতে পরিণত হওয়া কলম্বিয়ার বিপক্ষে তেমন সুবিধা করতে পারছিল না ব্রাজিল। হতাশাজনকভাবে শেষ দুই দেখাতেই জয়বঞ্চিত (একটি করে জয় ও ড্র) ছিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ২০২৬ বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করে নেওয়ার লড়াইয়ে জয় ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প ছিল না সেলেকাওদের সামনে।
ঘরের মাঠ বিআরবি মানে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে আজ (শুক্রবার) ভোরে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হয় ব্রাজিল। লাতিন অঞ্চলের পরাশক্তি দুই দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস আগেই মিলেছিল। ম্যাচের শুরুতেই পেনাল্টিতে ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন দারুণ ফর্মে থাকা রাফায়েল রাফিনিয়া। বিরতির আগমুহূর্তে গোল করে লুইস দিয়াজ কলম্বিয়াকে সমতায় ফেরান।
তবে ইনজুরি সময়ের নবম মিনিটে গিয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে ভিনিসিয়ুস স্বাগতিক দর্শকদের উল্লাসে মাতান। জয় নিশ্চিত করেন ২-১ গোলে। ম্যাচটিতে নামার আগেই চোটের কারণে নেইমার-এডারসন-দানিলোদের মতো তারকাদের হারানোর ক্ষত ছিল সেলেসাওদের।
এরপর ম্যাচেও ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার ও মিডফিল্ডার গারসন। এ ছাড়া ১০ ফুটবলারের ওপর ছিল হলুদ কার্ড দেখলে আর্জেন্টিনা ম্যাচ থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা। যা সত্যি হয়েছে দুজনের, ব্রুনো গুইমারেস ও গ্যাব্রিয়েল মাগালায়েসের।
ব্রাজিল ম্যাচের প্রথম গোলটাও পায় ভিনিসিয়ুসের কল্যাণে। কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার দানিয়েল মুনোজ তাকে ডি-বক্সে ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর বাঁ পায়ের বাঁকানো শটে সফল স্পট কিক নিয়েছেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড রাফিনিয়া। এ নিয়ে ব্রাজিলের জার্সিতে শেষ ৪ ম্যাচে তিনি চতুর্থ গোল করলেন।
খানিক বাদেই রদ্রিগোর শট বেরিয়ে যায় বাইরে দিয়ে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মাঝে ব্রাজিল ম্যাচে দু’বার ধাক্কা খায়। প্রথমত চতুর্দশ মিনিটে কলম্বিয়ার কাউন্টার অ্যাটাক রুখতে গিয়ে ট্যাকল করে হলুদ কার্ড দেখেন গুইমারেস, যা তাকে আর্জেন্টিনা ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে। এরপর ২৭ মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় গারসনকে।
এরপর দুই দলই লিড পাওয়ার আশায় আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ জমিয়ে তোলে। ব্রাজিলের নিউক্যাসল তারকা জোয়েলিন্টন ভালো একটি শটও নিয়েছিলেন, তবে সেটি ছিল লক্ষ্যভ্রষ্ট। যোগ করা সময়ের অষ্টম মিনিটে দূরের পোস্টে হেড করতে গিয়ে মাথায় চোট পান ব্রাজিল ডিফেন্ডার গুইলার্মে অ্যারানা।
কয়েক সেকেন্ড পরই ডি-বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার আড়াআড়ি শটে জাল খুঁজে নেন ভিনিসিয়ুস। যা গোলরক্ষক ভার্গাস ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি।
এই জয়ে লাতিন বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পয়েন্ট টেবিলে বড় উন্নতি হয়েছে ব্রাজিলের। ১৩ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে তারা দুইয়ে উঠে গেলে। সমান ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে নেমে গেল কলম্বিয়া। ১২ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে আর্জেন্টিনা। সমান ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে তিনে নেমে গেছে উরুগুয়ে।