দেশে এসে উচ্ছ্বসিত হামজা; ভারতকে হারানোর আশাবাদ
বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের অপেক্ষার অবসান হয়েছে। বাংলাদেশের জার্সিতে খেলার জন্য হামজা দেওয়ান চৌধুরী দেশে এসে পৌঁছেছেন। দেশে এসে উচ্ছ্বসিত হামজা ভারতকে হারানোর আশাবাদ ব্যক্ত করলেন।
বাফুফে হামজার জন্য ভিআইপির ব্যবস্থা রেখেছে। সিলেট বিমানবন্দরে হামজাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশ বিমানের স্টেশন ম্যানেজার শাকিল আহমেদ। বিমানবন্দরের মধ্যেই দায়িত্বরত অনেকেই হামজা ও তার পরিবারের সঙ্গে ছবি তোলেন।
ভিআইপি এরিয়ার মধ্যেও বেশ জমায়েত হয়েছিল। ভিআইপি গেটের বাইরে গণমাধ্যমকর্মীরা অপেক্ষা করছিলেন। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা সেরে গণমাধ্যমের সামনে হামজাকে নিয়ে আসতে বাফুফের ঘণ্টা খানেক সময় লেগেছে।
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত সকল গণমাধ্যমের প্রতিনিধিই সিলেট বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। গণমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমে কাজ করা অনেকেও ছিলেন। ফলে হামজার মিডিয়া সেশন পরিচালনা করতে বাফুফে সদস্যদের বেশ গলদঘর্ম হয়েছে।
গতকাল ম্যাচ খেলে নয় ঘণ্টা বিমানে ভ্রমণের পরও তাকে নিয়ে সাধারণ মানুষ ও গণমাধ্যমের এমন উন্মাদনা বেশ অভিভূত করেছে। তাই তিনি প্রথম প্রতিক্রিয়াতেই বলেছেন,
‘এমিজিং, এমিজিং। দীর্ঘদিন (১১ বছর) পর এখানে আসতে পেরে আমি এক্সাইটেড।’
হামজার প্রথম মিশন ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাই। এই ম্যাচকে তিনি ডার্বি আখ্যায়িত করে বলেন,
‘ইন আল্লাহ আমরা ডার্বি জেতার আশা রাখি এবং জিতে আমরা উন্নতি করতে চাই।’
হামজা জন্ম ও বেড়ে উঠা ইংল্যান্ডে হলেও তার বাবা-মা বাংলাদেশি। ইংল্যান্ডেও বাঙালি আবহে বেড়ে উঠেছেন তিনি। সিলেটি অঞ্চলের ভাষায় কথা বলতে পারেন। বাংলাদেশের হয়ে খেলতে যাওয়া ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলারের কাছে বাংলায় প্রত্যাশা জানতে চাওয়ার প্রশ্নটি ইংরেজিতে করা হলে তিনি প্রথমে বুঝেননি,
‘আমি বুঝছি না , বুঝছি না’।
এরপর পুরোপুরি বাংলায় প্রশ্ন হওয়ার পর হামজা সিলেটি ভাষায় বেশ সুন্দরভাবে বলেন,
‘ইনশাআল্লাহ আমরা উইন করমু। আমরার বিগ ড্রিম আছে, আমি কোচ হ্যাভিয়েরের সঙ্গে মাতসি (কথা বলেছি)। ইনশাআল্লাহ আমরা উইন করে প্রোগ্রেস করতে পারমু।’
বাফুফে কর্তারা গণমাধ্যম সামলাতে পারছিলেন না। দ্রুত মিডিয়া সেশন শেষ করে হামজাকে ভেতরে নিয়ে যেতে চান। শুরুর প্রশ্নই আবার শেষে করা হয়-বাংলাদেশে এসে এত উন্মাদনা-ভালোবাসা কেমন লাগছে? এর উত্তরে হামজা বলেন,
‘আমার হৃদয় পূর্ণ’।
এই মন্তব্যের পরপরই হামজাকে বাফুফে কর্তারা ভেতরে নেন।
হামজাকে বরণ করা বাফুফে প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য সাবেক জাতীয় ফুটবলার গোলাম গাউস বলেন,
‘বাইরের মতো ভেতরে থাকা সবাইও হামজাকে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বসিত। গাড়িতে হামজা ও তার পরিবারের লাগেজ উঠানো হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই হবিগঞ্জের উদ্দেশে সপরিবারে রওনা হবেন হামজা।’
এদিকে পবিত্র রমজান মাসের মধ্যেও নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগেই হামজা চৌধুরীকে এক নজর দেখার জন্য বিমানবন্দরে এসেছেন বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা। হামজাকে স্বচক্ষে এক নজর দেখার জন্য সিলেট এয়ারপোর্টের বাইরে অনেক সমর্থক ভিড় করেছেন। কেউ কেউ ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যমকর্মীরাও বিমানবন্দরে ভিড় জমিয়েছেন।