হ্যাটট্রিক জয়ে প্লে অফের আরও কাছে রাজশাহী; দুশ্চিন্তায় খুলনা
আসর থেকে আগেই ছিটকে গেছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। তাই আজকের ম্যাচটা তাদের জন্য কেবলই নিয়ম রক্ষার লড়াই ছিল। তবে দুর্বার রাজশাহীর জন্য এই ম্যাচটা ছিল মহাগুরুত্বপূর্ণ। এমন ম্যাচে দুই বিদেশি নিয়ে খেলতে নেমে বড় জয় পেয়েছে তারা। সর্বশেষ তিন ম্যাচের সবকটাতে জেতায় প্লে অফের আরো কাছাকাছি চলে গেল তাসকিন আহমেদের দল।
সোমবার মিরপুরে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১১৭ রান সংগ্রহ করে সিলেট। জবাবে খেলতে নেমে ১৬ ওভার ৫ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রাজশাহী।
১১৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি রাজশাহীর। ২২ রান তুলতেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারায় দুর্বাররা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফেরেন সাব্বির হোসেন। ৫ বল খেলে ডাক খেয়েছেন তিনি। তিনে নেমে ডাক খেয়েছেন এনামুল হক বিজয়ও। আর ইয়াসির আলির ব্যাট থেকে এসেছে ২ রান।
টপ অর্ডার ব্যর্থতার দিনে দলের হাল ধরেন রায়ান বার্ল ও আকবর আলি। ৪৩ রান করে আকবর আউট হলে ভাঙে ৭৫ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি। তবে ততক্ষণে জয়ের কাছাকাছি চলে যায় রাজশাহী। বাকি কাজটা মেহেরাবকে সঙ্গে নিয়ে সহজেই সেরেছেন বার্ল। এই রোডেশিয়ান অপরাজিত ছিলেন ৩৪ বলে ৪৮ রান করে।
এর আগে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে সিলেট। টপ অর্ডারে জাকির হাসান ছাড়া আর কেউই দাঁড়াতেই পারেননি। সামিউল্লাহ শিনওয়ারি-আরিফুল হকরা ছিলেন একেবারেই ব্যর্থ।
মিডল অর্ডারে জাকের আলি ও আহসান ভাট্টি দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছেন। তবে কেউই দায়িত্ব নিয়ে এক প্রান্ত আগলে আগলে রেখে খেলতে পারেননি। দুজনই উইকেটে থিতু হয়েও সুবিধা করতে পারেননি। জাকেরের ব্যাট থেকে এসেছে ১৭ রান। আর ভাট্টি করেছেন ২৫ রান। শেষদিকে সুমন খান ১১ বলে ২০ রানের ইনিংস খেললে কোনোরকমে একশ পার হয় দল।
এর আগে দিনের প্রথম ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। ডেভিড মালানের ফিফটির পর ফাহিম আশরাফ এবং মোহামদ নবীর ফিনিশিংয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বরিশাল।
আগে ব্যাট করতে বরিশালকে ১৮৮ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল খুলনা। জবাব দিতে নেমে ৫ বল এবং ৫ উইকেট হাতে থাকতেই জয় তুলে নেয় বরিশাল। আট জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দু্ইয়ে রয়েছে তারা।
চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বরিশাল। ৭ বলে ১১ রান করে সাজঘরে ফেরেন তাওহীদ হৃদয়। তবে তিনে ব্যাট করতে নেমে ঝড় তুলতে থাকেন ডেভিড মালান। ২৯ বলে ফিফটি তুলে নেন এই ইংলিশ ব্যাটার। ২৫ বলে ২৭ রান করে তাকে সঙ্গ দেন তামিম।
তামিমের আউটের নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি মালানও। ৩৭ বলে ৬৩ রান করে ফেরেন এই তারকা ক্রিকেটার। এরপর বরিশাল শিবিরের হাল ধরেন দেশের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে রান আউট হন মাহমুদউল্লাহ (২৪)। এরপরই পায়ে টান লাগায় এরশাদ মাঠে ছাড়লে বোলিংয়ে আসেন আবু হায়দার।
প্রথম বলেই মুশফিককে ক্যাচ আউটের ফাঁদে ফেলেন তিনি। ১৭ ববেল ২৪ রান করেন তিনি। এতে ১৮ বলে বরিশালের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৫ রান। শেষ পর্যন্ত মোহাম্মদ নবির ১০ রান এবং ফাহিম আশরাফের ৬ বলের অপরাজিত ১৮ রানের ইনিংসে ভর করে ৫ বল এবং ৫ উইকেট হাতে থাকতেই জয় তুলে নেয় বরিশাল।
খুলনা টাইগার্সের হয়ে দুই উইকেট শিকার করেন আবু হায়দার রনি। এ ছাড়াও আফিফ হোসেন ও সালমান এরশাদ একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে খুলনাকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম শেখ। দুজনের ব্যাট থেকে আসে ৪৭ রান। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি মিরাজ। ১৮ বলে ২৯ রান করে বোল্ড আউট হন তিনি।
তবে তিনে ব্যাট করতে না বোসিস্টোকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন নাঈম। ২৬ বলে ফিফটি তুলে নেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। পরের বলেই ক্যাচ আউট হন তিনি। এতে ৯ ওভারে ৯৯ রানে ২ উইকেট হারায় খুলনা। ১৫ বলে ২০ রান করে আউট হন অ্যালেক্স রোস।
এরপর বোসিস্টোকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন আফিফ হোসেন। তবে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। ২৭ বলে ৩২ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ৬ বলে ২ রান করে ফেরেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। এতে রানের গতি কমে যায় খুলনার।
সপ্তম উইকেটে পিচে এসে ব্যাট চালাতে থাকেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। শেষ পর্যন্ত বোসিস্টোর ১৬ বলের ২০ রান এবং অঙ্কনের ১২ বলের অপরাজিত ২৭ রানের ভর করে ১৮৭ রানের লড়াকু পুঁজি পেয়েছিল খুলনা।