আগে থেকে উল্টে থাকা কিংসদের সাম্পান হেসে খেলেই ডুবিয়ে দিলো বরিশাল
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের প্রথম ম্যাচে চিটাগং কিংসকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। লো স্কোরিং ম্যাচটায় বেশ সহজেই জিতেছে বরিশাল।
ফরচুন বরিশালের উদ্বোধনী জুটি থেমেছে মাত্র ১৪ রানের মাথাতে। ১৪ বলে ৮ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন দলীয় অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তিনে নামা তাওহিদ হৃদয় সুবিধা করতে পারেননি। ৪ বলে ১ রান করে আউট হন হৃদয়।
ওপেনার ডেভিড মালান টিকে ছিলেন। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় অত মারমুখি ব্যাটিং করেনি বরিশাল। চারে নেমে ধীরেসুস্থে এগিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ২৮ রান তুলেছে বরিশাল।
পাওয়ারপ্লে শেষেই আউট হয়েছেন মুশফিক। দলের ৩২ রানের মাথাতে ১০ বলে ১১ রান করে বিদায় নেন মুশফিক। মালানের সাথে যোগ দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শুরুটা ভালোভাবেই করেছিলেন রিয়াদ, তবে চালিয়ে যেতে পারেননি। ১১ বলে ১৬ রান করে বিদায় নেন তিনি।
বেশ কিছু উইকেট হারিয়ে চাপে ছিল ফরচুন বরিশাল। টিকে থাকা ডেভিড মালান ততক্ষণে উইকেটে সেট হয়ে গিয়েছেন। পরিস্থিতি বুঝে কার্যকরী ব্যাটিংয়ে এগিয়েছেন মালান। দারুণ সব শটে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের রান বাড়িয়েছেন, চাপ কমিয়েছেন। দল এগিয়েছে জয়ের দিকে। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিয়েছেন মোহাম্মদ নবী। পরিস্থিতি বিবেচনায় অত আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের প্রয়োজন ছিল না, ফলে অযথা ঝুঁকি নেননি মালান-নবী।
মালান-নবীর ব্যাটে চড়েই জয়ের পথে ছুটেছে বরিশাল। মালান ছুঁয়েছেন ফিফটি। নবীও টিকে ছিলেন শেষ পর্যন্ত। ১৯ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় ফরচুন বরিশাল। ৪১ বলে ৫৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন মালান। নবী টিকে ছিলেন ২১ বলে ২৬ রান করে।
চিটাগং এর হয়ে ২ উইকেট তুলেছেন খালেদ আহমেদ, ১ উইকেট নেন আরাফাত সানি।
ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ফরচুন বরিশাল। শুরু থেকে কিংসদের চাপেই রেখেছিলেন তারা। ওপেনিং এ উসমান খান ব্যাটিংয়ে; ধুমধাড়াক্কা এগোতে থাকলেও বেশি দূর আগাতে পারেননি তিনি। ১৩ বলে ১৯ রান করে আউট হন উসমান। দলের ২১ রানের মাথাতে সাজঘরে ফিরেছেন উসমান খান। একই ওভারে ফিরেছেন তিনে নামা গ্রাহাম ক্লার্কও। ৪ বলে ৮ রানের ইনিংস খেলেছেন ক্লার্ক।
পরের ওভারে আউট হয়েছেন টিকে থাকা ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। ৩ বলে ১ রান করেছেন তিনি। দলের বেহাল দশার মাঝে হাল ধরেন কাপ্তান মোহাম্মদ মিঠুন। এক প্রান্তে ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল চলছিলই। অপর প্রান্ত আগলে রেখে খেলে যাচ্ছিলেন মিঠুন। পাওয়ারপ্লের মধ্যে হায়দার আলী এবং শামীম হোসেন পাটোয়ারীর উইকেটও হারিয়ে ফেলে চিটাগং। ৫ ওভারে ৩৯ রান তুলেছে চিটাগং কিংস, উইকেট হারিয়েছে ৫টি।
পাওয়ারপ্লে শেষে বিদায় নিয়েছেন আলিস আল ইসলাম। ৭ বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন আলিস। মিঠুন এক প্রান্তে লড়াই অব্যাহত রেখেছেন। আলিসের বিদায়ের পর মিঠুনের সাথে যোগ দিয়েছেন আরাফাত সানি। ৫৬ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা চিটাগংকে কিছুটা হলেও ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা চালিয়েছেন দুজন।
মিঠুন আউট হয়েছেন দলের ৮৭ রানের মাথাতে, করেছেন ৩৪ বলে ৩৫ রান। শেষ দিকে লড়াই চালিয়ে গেছেন সানি। ৩৪ বলে ২৭ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন আরাফাত সানি। নির্ধারিত ২০ ওভারের খেলা শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে টেনেটুনে ১২১ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে চিটাগং কিংস।
ফরচুন বরিশালের হয়ে ৩টি করে উইকেট শিকার করেন রিপন মন্ডল এবং ফাহিম আশরাফ। ২ উইকেট তোলেন তানভীর ইসলাম।