খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

শুক্রবার, ৬ই ডিসেম্বর ২০২৪

আবারও সাফের শ্রেষ্ঠত্ব বাংলার বাঘিনীদের

সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে হারাল ২-১ গোলে

আরও একবার সাফ ফুটবলে উড়ল লাল সবুজের পতাকা।  গৌরবমাখা এক জয় উপহার দিল বাংলার বাঘিনীরা।

নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে মেয়েদের সাফের শিরোপা ধরে রাখল তারা। হিমালয়ের দেশে আবারও সফলতার খুঁটি গেড়ে নিজেদের নিয়ে গেল অনন্য এক উচ্চতায়।

 

এবারের দলটি নিয়ে অভিযোগের কমতি ছিল না। শোনা যায় মাঠের ফুটবলের চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করতেই বেশি তোড়জোড়। কিন্তু দিনশেষে এই মেয়েরা সমালোচক ভুল প্রমাণ করলেন আরও।

বাংলাদেশ অধিনায়ক আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন ফাইনাল জয় গতবারের মতো এতো সহজ হবে না। দিনশেষে ঠিক সেটাই হলো।  সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচ রং ছড়াতে শুরু করে। প্রথমার্ধে ক্রসবারের বাধায় এগিয়ে যাওয়া হলো না দুই দলের। দ্বিতীয়ার্ধে লড়াই চললো সমানতালে। বাংলাদেশের হয়ে গোল করলেন মনিকা চাকমা এবং ঋতুপর্ণা চাকমা। ম্যাচে সমতায় ফিরলেও শেষ পর্যন্ত সমর্থকদের সামনে আবারও হতাশার গল্প লিখল নেপালের মেয়েরা।

দ্বিতীয় মিনিটে গীতা রানার ভুলে গোল হজম করতে বসেছিল নেপাল। গোলকিক নিতে এসে পিছলে পড়ে ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি। বক্সের বাইরে থাকা তহুরা খাতুন বল পেয়ে জালে পাঠানোর উদ্দেশ্যে শট নেন। কিন্তু ক্রসবারে লেগে বল ফিরে আসে। ফিরতি বলে তহুরার হেড নেপালের গোলরক্ষ আঞ্জিলা সুব্বুর গ্লাভসে জমা পড়লে রক্ষা পায় নেপাল।

ক্রসবারের বাধায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি নেপালেরও। ম্যাচের ১০ মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে সাবিত্রা ভান্ডারির উদ্দেশ্যে মাঝ মাঠ থেকে ‍উঁচু পাস বাড়ান প্রীতি। বক্সের ভেতর ঢোকা বল ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক রূপনা চাকমা। ফিরতি বলে সাবিত্রার ক্রস বক্সের বাইরে পেয়ে যান আমিসা। তার জোরালো শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি স্বাগতিকদের। আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেললেও প্রথমার্ধ শেষ হয়েছে অবিচ্ছিন্ন থেকে।

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় দুই দল। ৫২ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। বক্সের বাইরে তহুরার উদ্দেশ্যে পাস দেন সাবিনা। তবে বল পান নেপালের ফুটবলার রানা মাগার। তার ভুল পাসের সুযোগ নিতে ভুল করেননি মনিকা চাকমা। তাকে ঠেকানোর জন্য নেপাল গোলরক্ষক পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসলেও লাভ হয়নি। জটলার মধ্য থেকেও মনিকা ঠিকই বল জালে জড়ান।

সমতায় ফিরতে সময় নেয়নি নেপাল। চার মিনিটের ব্যবধানে আমিশা কার্কির গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। প্রীতির থ্রু বল ধরে বক্সের কাছে বল পেয়ে যান আমিশা। একাই বল নিয়ে বক্সে ঢুকে রূপনাকে বোকা বানান তিনি। ৬০ মিনিটে অল্পের জন্যে এগিয়ে যাওয়া হয়নি নেপালের। সাবিত্রা ভান্ডারির শট অল্পের জন্য সাইড পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।

৬৭ মিনিটে মারিয়ার বুলেট গতির শট ঝাপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন নেপালের গোলরক্ষক। ঋতুপর্ণার পাস থেকে বক্সের বাইরে বল পান মারিয়া। সেখান থেকেই জোরালো শট নেন তিনি। কিন্তু লাভ হয়নি তাতে

৮১ মিনিটে বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হলেন ঋতুপর্ণা চাকমা। বাঁ প্রান্তের দুরূহ কোণ থেকে দারুণ এক শট নেন তিনি। সেটা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন নেপাল গোলরক্ষকও। কিন্তু বল তার হাত ছুঁয়ে ঠিকই জালে প্রবেশ করে। গোলের পর নেপালি দর্শকদের চুপ থাকার নির্দেশ দেন ঋতু। শেষ পর্যন্ত চুপিসারেই মাঠ ছাড়তে নেপালকে।  খেলার বাকি সময়ে চেষ্টা করেও আর ম্যাচ ফিরতে পারেনি স্বাগতিকরা।

দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র সাফ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের শিরোপা ধরে রাখার অতীত রেকর্ড নেই। ২০০৩ সালে ঢাকায় সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বাংলাদেশের পুরুষ দল আর শিরোপা জিততে পারেনি। কিন্তু সাফ জিতে কীভাবে শিরোপা ধরে রাখতে হয় এর দারুণ এক উদাহরণই সৃষ্টি করল নারী দল!

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy