স্বপ্নিল অভিষেক নবীন পেসার জেভিয়ার বার্টলেটের
সিরিজের প্রথম ম্যাচে শুক্রবার ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং ধসিয়ে দিয়ে ১৭ রানে ৪ উইকেট নেন বার্টলেট। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওয়ানডে অভিষেকে যা দ্বিতীয় সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড।
নিজেকেই চমকে দিয়ে বার্টলেট ম্যাচের পর বললেন, “মনে হচ্ছে এটা প্রায় অবাস্তব কিছু…।”
এরকম তার মনে হওয়ারই কথা। ৫০ ওভারের সংস্করণে ঘরোয়া ক্রিকেটেও যে প্রায় দেড় বছর ধরে খেলছিলেন না তিনি! ব্যস্ত ছিলেন চোটের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ে।
দুঃসময়ের সেই আঁধার পেরিয়ে আলোয় আসেন তিনি এবারের বিগ ব্যাশের পারফরম্যান্সে। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ২০ উইকেট শিকার করেন তিনি। ব্রিজবেন হিটের শিরোপা জয়ে রাখেন বড় অবদান। সেই পারফরম্যান্সই তাকে নজরে আনে অস্ট্রেলিয়ান নির্বাচকদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই সিরিজে মূল পেসারদের বিশ্রাম আর বিকল্প কয়েকজনের চোটের কারণে সুযোগ পেয়ে যান বার্টলেট। বাকিটা যেমন বলা হয়… ইতিহাস!
ওয়ানডে দলে ডাক পাওয়াটাই তার নিজের কাছে ছিল বিস্ময়কর। বিগ ব্যাশ চলার সময়ও এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, সহসাই জাতীয় দলের ডাক আশা করছেন না তিনি। অভিষেকে দারুণ কীর্তির পরও তার কণ্ঠে সেই সুর। ঘরোয়া ক্রিকেটে এই সংস্করণে সবশেষ খেলেছিলেন তিনি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে। অথচ এই সংস্করণেই অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে মাঠে নামবেন, ভাবতে পারেননি তিনি।
“ওহ… অবশ্যই নয় (খেলার আশা করেছিলেন কি না)… এই মুহূর্তে আমাদের এত এত ফাস্ট বোলার আছে! (মিচেল) স্টার্ক, (জশ) হেইজেলউড, (প্যাট) কামিন্স তো সম্ভবত এই আলোচনায় শীর্ষ তিনজন। আমার তো সুযোগ এলো জাই রিচার্ডসন ও ন্যাথান এলিস চোটে পড়ায়।”
“একজনের সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছিল আমার, বলছিলাম যে ১৫-১৬ মাস ধরে কোনো ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলিনি আমি। তো সত্যি বলতে… জানি না (কীভাবে হলো)… সবকিছুই খুব দ্রুত হয়ে গেল।”
খেলার আশা না করলেও মানসিকভাবে তিনি তৈরি ছিলেন যে, সুযোগটা এলে কাজে লাগাতে কোনো ঘাটতি রাখবেন না।
“আমার আগেও অবশ্যই লম্বা একটি তালিকা আছে ফাস্ট বোলারদের। আমি স্রেফ চেষ্টা করেছি কুইন্সল্যান্ডের হয়ে সেরাটা করে যেতে এবং ওপরের পর্যায়ে সুযোগ এলে যেন তা লুফে নিতে পারি এবং এই পরিক্রমায় যতটা সম্ভব শিখতে পারি।”
অভিষেকে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলিংয়ের কীর্তিতে বার্টলেটের ওপরে আছেন কেবল টনি ডডেমেইড। ১৯৮৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২১ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। সাবেক এই পেসার এখন অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচক ও এই ম্যাচে ছিলেন দলের সঙ্গেই।
বোলিংয়ের পর দলের ব্যাটিং ইনিংসের সময় একসঙ্গেই বসেছিলেন তারা দুজন। বার্টলেট শোনালেন সেই সময়ের অভিজ্ঞতা।
“আমরা বসে ছেলেদের ব্যাটিং দেখছিলাম। সেই সময় স্ক্রিনে ভেসে ওঠে (অভিষেকে সেরা বোলিংয়ের কীর্তি)। ওখানে যাদের নাম ছিল, তাদের পাশে নিজের নাম দেখতে পারা দারুণ ব্যাপার। সে (ডডেমেইড) কিছু বলেননি। তবে আমি তার সঙ্গে একটা ছবি তুলে রেখেছি।”
দ্বিতীয় ওয়ানডের দল থেকে বার্টলেটের বিশ্রাম ও হেইজেলউডের ফেরা ছাড়াও দলে পরিবর্তন আছে আরও। এই সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ তো বটেই, পরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকেও বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে ট্রাভিস হেডকে। তার বদলে কাউকে যোগ করা হয়নি। এই সময়ে অস্ট্রেলিয়ার আলোচিত তরুণ ব্যাটসম্যান জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্কের তাই অভিষেক হতে পারে।
ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ সিডনিতে রোববার, শেষটি ক্যানবেরায় মঙ্গলবার। শেষ ম্যাচের দলে ‘কাভার’ হিসেবে যোগ করা হয়েছে বাঁহাতি ফাস্ট বোলার স্পেন্সার জনসনকে।