অলিম্পিকে ক্রিকেট খেলতে না পারার শঙ্কায় বাংলাদেশসহ তিন দেশ!
ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) অলিম্পিকের জন্য ছয় দল চূড়ান্তের যে প্রক্রিয়া নির্ধারণ করেছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। খেলতে না পারার শঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশসহ তিন দেশ।
সোয়া শ বছরের বিরতির পর ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে ফিরছে ক্রিকেট। ছেলে ও মেয়েদের ইভেন্টে খেলবে ছয়টি করে দল।
অলিম্পিকের অংশগ্রহণকারী দল নির্বাচনের যে পদ্ধতি, তাতে পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার মতো দলগুলোর খেলার সুযোগ অতি সীমিত।
অনিশ্চয়তা আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল বা ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের কোনো দলের অংশগ্রহণও। যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।
জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত আইসিসি বার্ষিক সভায় অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশির লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক নিয়ে আলোচনা হয়।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, সভার পর আইসিসি অলিম্পিকের ছয় দল নির্ধারণের প্রক্রিয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রস্তাব অনুযায়ী এশিয়া, ওশেনিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার শীর্ষ র্যাঙ্কিংয়ের দলগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে অলিম্পিকে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে।
আর স্বাগতিক হিসেবে সুযোগ পাবে যুক্তরাষ্ট্র। বাকি থাকা ৬ নম্বর জায়গাটি কীভাবে পূরণ হবে, সেটি পরে ঠিক হবে।
বর্তমান টি–টোয়েন্টি র্যাঙ্কিং অনুসারে এশিয়ার শীর্ষ দল ভারত (র্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বর), ওশেনিয়ার সেরা অস্ট্রেলিয়া (র্যাঙ্কিংয়ে ২), ইউরোপের সেরা ইংল্যান্ড (র্যাঙ্কিংয়ে ৩) আর আফ্রিকার সেরা দল দক্ষিণ আফ্রিকা (র্যাঙ্কিংয়ে ৫)।
আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) চায় বিশ্বের সব অঞ্চল থেকে গেমসে প্রতিনিধিত্ব থাকুক।
সেদিক থেকে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র আর চার মহাদেশের র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানধারীর অংশগ্রহণ ‘বৈশ্বিক’ রূপই পায়।
তবে ‘সেরা দলই অলিম্পিকে খেলবে’—এমন মানদণ্ড এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য পায় না। বর্তমানে আইসিসির পূর্ণ সদস্যদেশ আছে ১২টি।
এর মধ্যে র্যাঙ্কিংয়ে সেরা পাঁচে থাকার পরও ওশেনিয়া অঞ্চলের নিউজিল্যান্ড (৪ নম্বরে) আঞ্চলিক র্যাঙ্কিং বাছাইয়ের কারণে অলিম্পিকে সুযোগ পাচ্ছে না।
আবার যুক্তরাষ্ট্র (র্যাঙ্কিংয়ে ১৭) স্বাগতিক হিসেবে অলিম্পিকে অংশগ্রহণের সুযোগ পেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সম্ভাবনাও প্রায় শেষ বলা চলে।
অলিম্পিকে সাধারণত সার্বভৌম দেশ অংশগ্রহণ করে থাকে।
ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নামে যে দলটি খেলে থাকে, সেটি মূলত ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলোর খেলোয়াড় নিয়ে গড়া।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড আঞ্চলিক বাছাইয়ের মাধ্যমে যেকোনো একটি দেশকে অলিম্পিকে পাঠাতে চায়, যেমনটা হয়েছে ২০২২ কমনওয়েলথ গেমসের সময় (বার্বাডোজ খেলেছিল)।
এবার যুক্তরাষ্ট্র অলিম্পিক খেললে আমেরিকা অঞ্চল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিনিধিত্ব আটকে যেতে পারে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ডের পাশাপাশি ২০২৮ অলিম্পিকে খেলার আশা মিইয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ (১০), পাকিস্তান (৮), শ্রীলঙ্কা (৭), আফগানিস্তানের (৯) মতো দলগুলোরও।
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, অলিম্পিকে খেলার সুযোগ হাতছাড়া হতে চলায় অসন্তোষ জানিয়েছে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড।
তবে আঞ্চলিক র্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে দল নির্ধারণের বিষয়টি এখনো আইসিসি চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করেনি। যদিও সংশোধনের সম্ভাবনা কমও বলে লিখেছে গার্ডিয়ান।
এ ছাড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেয়েদের ইভেন্টের ছয় দল ২০২৬ নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে।
অলিম্পিকে এখন পর্যন্ত মাত্র একবারই ক্রিকেট খেলা দেখা গেছে।
১৯০০ সালে প্যারিস অলিম্পিকে গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মধ্যকার একমাত্র ম্যাচে জিতে সোনা জিতেছিল গ্রেট ব্রিটেন।

