মেসির জোড়া গোলের জাদুতে সেমিফাইনালে মায়ামি
ম্যাচের শুরুতেই অ্যারন লং যখন গোল করলেন, ইন্টার মায়ামি তখন খাদের কিনারায়। প্রথম হেরে যাওয়া দলের সামনে তখন দুই গোল ফিরিয়ে দেওয়ার কঠিন চ্যালেঞ্জ। লিওনেল মেসি নামের জাদুকর আছে যে দলে, তাদের জন্য অসম্ভব বলে তো কিছু নেই! জোড়া গোলের জাদুতে ইন্টার মায়ামিকে সেমিফাইনালে তুললেন আর্জেন্টাইন মহানায়ক।
কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে লস অ্যাঞ্জেলেস এফসির (এলএএফসি) কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল ইন্টার মায়ামি। বাংলাদেশ সময় আজ সকালে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের জোড়া গোলে প্রত্যাবর্তনের দুর্দান্ত গল্প লিখে দ্বিতীয় লেগটা ৩-১ গোলে জিতে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের শেষ চারে উঠে গেছে মায়ামি। দুই লেগ মিলিয়ে মেসিরা জিতলেন ৩-২ গোলে।
কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালের স্মৃতি মনে হলে আজও আর্জেন্টিনা সমর্থকদের হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়। ফাইনালটি এতটাই উত্তেজনাপূর্ণ ও শ্বাসরুদ্ধকর ছিল যে, সেই ম্যাচে ফ্রান্সের বিপক্ষে দুটি গোল করে আর্জেন্টিনাকে শেষমেশ শিরোপা উপহার দিয়েছিলেন লিওনেল মেসি।
এবার ইন্টার মিয়ামির জার্সিতে প্রায় আড়াই বছর আগের সেই স্মৃতি ফেরালেন লিওনেল মেসি। ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচের মতোই আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) লস অ্যাঞ্জেলস এফসির বিপক্ষেও সমান দুটি গোল করেছেন মেসি। দলও জিতিয়েছেন।
বিশ্বকাপের ফাইনালেও ফ্রান্সের গোলরক্ষক ছিলেন হুগো লরিস, এই ম্যাচেও লস অ্যাঞ্জেলসের গোলরক্ষক হয়ে খেলেছেন তিনিই।
প্রথম লেগে লস অ্যাঞ্জেলসের মাঠে ১-০ গোলে হেরে আসা মায়ামি দ্বিতীয় লেগে ঘরের মাঠে আরও পিছিয়ে পড়ে ম্যাচের নবম মিনিটেই। জটলার মধ্য থেকে মায়ামির রক্ষণের ভুলে নবম মিনিটে গোল করেন অ্যারন লং।
৩১তম মিনিটে চকিতে ফ্রি-কিক নিয়ে সরাসরি বল জালে পাঠান মেসি। মায়ামি মেতে ওঠে উল্লাসে। তবে লস অ্যাঞ্জেলসের গোলকিপার উগো লরিস ও অন্যরা কেউ তখনও প্রস্তুতই ছিলেন না। তাদের দাবির মুখে ভিএআর দেখে গোল দেননি রেফারি।
তবে মিনিট চারেক পরই সমতায় ফেরে মায়ামি। লুইস সুয়ারেসের টোকায় বক্সের একটু বাইরে বল পেয়ে প্রতিপক্ষের একজনকে কাটিয়ে বক্সের ভেতরে ঢুকেই আচমকা শট নেন মেসি। তার বাঁ পায়ের দুর্দান্ত কোনাকুনি শট আশ্রয় নেয় জালে।
মায়ামির দ্বিতীয় গোলটি ছিল অদ্ভুত। ৬১তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে গোলমুকে আলতো করে চিপ করেন নোয়াহ অ্যালেন। তার সতীর্থ ফেদেরিকো রেদোন্দো ছুটে গিয়েও বলে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি, তবে উড়ন্ত বল ধরতে এগিয়ে এসে ফ্লাইট বুঝতে পারেননি লস অ্যাঞ্জেলসের গোলকিপার লরিসও। বল মাটিতে পড়ে ঢুকে যায় জালে।
৮২তম মিনিটে মায়ামির কর্নার থেকে লস অ্যাঞ্জেলসের গোলমুখে জটলার মধ্যে হ্যান্ডবলের আবেদন তোলেন মেসিরা। ভিএআর দেখে রেফারি নিশ্চিত হন, মার্ক দেলগাদোর হাতে লেগেছে বল। ঠাণ্ডা মাথায় নেওয়া পেনাল্টিতে গোল করেন মেসি।
ম্যাচের শেষ দিকে দুই দফায় বড় বিপদ থেকে মায়ামিকে রক্ষা করেন গোলকিপার অস্কার উস্তারি। শেষ বাঁশি বাজতেই খ্যাপাটে উদযাপনে মেতে ওঠেন মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাসচেরানো।