আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কে বিদায় জানালেন কিংবদন্তি দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল
তারিখটা ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (শনিবার)। ৪৪ রানের সেই ইনিংসটিই বাংলাদেশের হয়ে তামিমের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আর কখনই বাংলাদেশ দলের জার্সিতে দেখা যাবেনা বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল খান -কে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে আর জলঘোলা না করে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাতে ভ্যারিফাইড ফেইসবুক আইডি থেকে নিজেই জানিয়ে দিলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অধ্যায় শেষ।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে থেকেই জাতীয় দলের সঙ্গে নেই ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। অভিমানে অবসর নিয়েও পুনরায় জাতীয় দলে ফিরেন। এরপর হঠাৎ বিশ্বকাপের আগে জাতীয় দল থেকে নিজকে সরিয়ে নেন। মাঝখানে প্রিয় বন্ধু সাকিবের সঙ্গে তামিমের দ্বন্দ্ব নিয়েও কম জল ঘোলা হয়নি।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণার আগে নির্বাচকরা তামিমকে দলে পেতে আগ্রহ প্রকাশ করলেও তামিম নিজের ভাবনায় অটুট রয়েছেন। তামিমের ভাষায়, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে আছি অনেক দিন ধরেই। সেই দূরত্ব আর ঘুচবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার অধ্যায় শেষ।’
তাকে আলোচনায় রেখে দলের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটুক চাননি জানিয়ে তামিম বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই এটা নিয়ে ভাবছিলাম। এখন যেহেতু সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় একটি আসর সামনে, আমি চাই না আমাকে ঘিরে আবার অলোচনা হোক এবং দলের মনোযোগ ব্যাহত হোক।’
তামিম অবশ্য অবসরের ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন, এমনটি দাবি করে লিখেছেন, ‘এটা অবশ্য আগেও চাইনি। চাইনি বলেই অনেক আগে নিজেকে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছি। যদিও অনেকেই বলেছেন, অনেক সময় মিডিয়ায় এসেছে, আমিই নাকি ব্যাপারটি ঝুলিয়ে রেখেছি। কিন্তু বিসিবির কোনো ধরনের চুক্তিতে যে নেই, এক বছরের বেশি সময় আগে যে নিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে, তাকে পরিকল্পনায় রাখা বা তাকে নিয়ে আলোচনারও তো কিছু নেই। তার পরও অযথা আলোচনা হয়েছে। অবসর নেওয়া বা খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত একজন ক্রিকেটার বা যে কোনো পেশাদার ক্রীড়াবিদের নিজের অধিকার। আমি নিজেকে সময় দিয়েছি। এখন মনে হয়েছে, সময়টা এসে গেছে।’
জাতীয় দলের অধিনায়কও নির্বাচক প্যানেলের মতো তামিমকে ফিরতে অনুরোধ করেন। তামিম জানান, ‘অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আন্তরিকভাবেই আমাকে ফেরার জন্য বলেছে। নির্বাচক কমিটির সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। আমাকে এখনও উপযুক্ত মনে করার জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। তবে আমি নিজের মনের কথা শুনেছি।’
মূলত ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে না পারার ধাক্কাটাই তামিমের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছে। যদিও তামিম ভক্তরা চাইতেন তিনি যেন আবারো গায়ে জড়ান বাংলাদেশের জার্সি।
তামিমের ভাষ্য, ‘২০২৩ বিশ্বকাপের আগে যা হয়েছে, আমার জন্য তা বড় ধাক্কা ছিল, যেহেতু ক্রিকেটীয় কারণে আমি দলের বাইরে যাইনি। তার পরও আমি যেখানেই গিয়েছি, ক্রিকেট ভক্তদের অনেকে বলেছেন, আমাকে আবার জাতীয় দলে দেখতে চান। তাদের ভালোবাসার কথা ভেবেছি আমি। আমার ঘরেও একজন অনুরাগী আছে। আমার ছেলে কখনও আমাকে সরাসরি বলেনি, কিন্তু তার মাকে বারবার বলেছে, বাবাকে আবার দেশের জার্সিতে খেলতে দেখতে চায়।’
ভক্তদের প্রতি দুঃখপ্রকাশ করে তামিম পরিশেষে লিখেছেন, ‘ভক্তদের হতাশ করার জন্য আমি দুঃখিত। ছেলেকে বলছি, ‘তুমি যেদিন বড় হবে, সেদিন বাবাকে বুঝতে পারবে।’