প্রবাসী ফুটবলারদের স্কিল ভালো, ফিটনেসে ঘাটতি; কোচ মারুফের অসম্মতি
আজ ২৮ জুন, শনিবার থেকে শুরু হয়েছে তিন দিন ব্যাপী প্রবাসী ফুটবলারদের ট্রায়াল কার্যক্রম। সকালে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে ২৪ জন ও বিকেলে ১৯ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে ২৫ জন ফুটবলার প্রায় ঘণ্টা দুয়েক ট্রায়াল দিয়েছেন।
প্রবাসী ফুটবলারদের স্কিল ভালো হলেও, ফিটনেসে ঘাটতি আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিচারক প্যানেল। আগামীকালও দুই বিভাগে আলাদা আলাদা সেশন অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের টানে আমেরিকা, ইংল্যান্ডসহ ইউরোপের অনেক দেশ থেকে ফুটবলাররা এসেছেন। ফুটবলের এই বৈশ্বিক ট্রায়ালের প্রথম দুই দিন মিডিয়ার প্রবেশাধিকার দেয়নি বাফুফে।
এখানে প্রতিপক্ষ দলের কৌশল জানার বা বিশেষ কোনো গোপনীয়তাও নেই। এরপরও বাফুফে মিডিয়াকে অবরুদ্ধ করার কৌশলেই হেঁটেছে।
সন্ধ্যার দিকে বাফুফের মিডিয়া বিভাগ আজকের ট্রায়াল নিয়ে ডেভলপমেন্ট কমিটির একজন সদস্য ও পারফরম্যান্স প্যানেলের দুই বিচারকের মন্তব্য পাঠিয়েছে।
সেখানে সাবেক তারকা গোলরক্ষক ও বাফুফে নির্বাহী সদস্য ছাইদ হাসান কানন বলেন,
‘প্রথম দিনে তারা একটু ক্লান্ত ছিল। সকালে একটু গরম ছিল। ফুটবল সেন্স ভালো হলেও ফিটনেসের ব্যাপারে ঘাটতি রয়েছে। এদের অনেকেরই সম্ভাবনা রয়েছে তবে সময় লাগবে।’
ট্রায়াল কার্যক্রম খুব কাছ থেকে তদারকি করছেন সাবেক জাতীয় ফুটবলার-কোচ এবং বর্তমানে ফেডারেশনের ট্যাকনিক্যাল ডাইরেক্টর সাইফুল বারী টিটু।
তিনি প্রথম দিনেই কোনো মন্তব্যে আসতে চান না,
‘প্রথম দিন হিসেবে আমরা বলব সময় দেয়া দরকার। এখনই মন্তব্য করার সময় আসেনি। অনেকে আবার স্কিল দেখিয়েছে। ফ্রি কিক থেকে গোলও হয়েছে। তারা যে আশা-আকাঙ্খা নিয়ে এসেছে। এখনই হয়তো তাদের ফুল পটেনশিয়াল দেখাতে পারবে না কিছু সময় দরকার। ঐ ব্যাপার চিন্তা করছি।’
এই ট্রায়ালে আসা ফুটবলারদের প্রায় সবাই শীত প্রধান দেশ থেকে এসেছেন। বর্তমানে ঢাকার গরমে তাদের ট্রায়াল দেয়া খানিকটা কষ্টকরই।
এটা বিবেচনা নিয়েই মূল্যায়ন করবে বাফুফের প্যানেল,
‘এই আবহাওয়া অনেকের জন্য বেশ কঠিন। আমরা মূল্যায়নের সময় এটা অবশ্যই বিবেচনায় আনব তাদের জানিয়েছি এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। অনেকেরই বয়স কম তাদের উন্নতির জায়গা রয়েছে। কোন জায়গায় উন্নতি প্রয়োজন সেটাও আমরা বলব।’
বিশ্বের দূর-দুরান্ত থেকে আসা ফুটবলারদের সাথে অনেক অভিভাবকও এসেছেন। বাফুফের ট্যাকনিক্যাল ডাইরেক্টর তাই পরিবারকে বিশেষ ধন্যবাদ দিলেন,
‘সন্তানের জন্য পারিবারিক সাপোর্ট খুব প্রয়োজন। অভিভাবকরা সন্তানের স্বপ্ন পূরণের জন্য অনেক শ্রম দিচ্ছেন এটা খুবই প্রয়োজন। মানুষ ব্যর্থতা থেকেই শেখে, সেই সময় পরিবার পাশে থাকলে অনেক কিছুই সহজ হয়।’
প্রবাসী ফুটবলারদের ট্রায়ালে পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করতে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল করেছিল বাফুফে। সেখানে ছিলেন দেশের অন্যতম সেরা কোচ মারুফুল হক। তিনি আজ দু’টি সেশনের কোনটিতেই ছিলেন না।
মারুফকে অনুপস্থিত দেখে যোগাযোগ করে জানা গেল তিনি এই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হবেন না,
‘ফেডারেশন থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল আমি বিনয়ের সঙ্গে না করেছিলাম।’
বাফুফে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে মারুফুল হকের নাম ঘোষণা করেছিল। প্রথম প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মারুফের নাম ছিল না। ঘন্টা দেড়েক পর আরেক বিজ্ঞপ্তিতে মারুফের নাম যুক্ত করে ফেডারেশন।
দেশের একজন শীর্ষ কোচের সম্মতি ছাড়া কীভাবে ফেডারেশন প্যানেল বিচারক হিসেবে নাম ঘোষণা করল সেটাও একটা বড় প্রশ্ন।
এ নিয়ে মারুফের মন্তব্য,
‘আমি না করেছি, এখন ফেডারেশন কী করেছে সেটা ফেডারেশনের বিষয়।’
আজ পারফরম্যান্স মূল্যায়ন প্যানেলে ছিলেন-
- লিগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানের কোচ আলফাজ আহমেদ
- সাবেক জাতীয় ফুটবলার ও এএফসি প্রো লাইসেন্সধারী কোচ জুলফিকার মাহমুদ মিন্টু
- বসুন্ধরা কিংসের সহকারী কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি
- বাফুফের হেড অফ একাডেমি গোলাম রব্বানী ছোটন
- সাবেক গোলরক্ষক ছাইদ হাসান কানন
জাতীয় দলের স্প্যানিশ হেড কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরাও পর্যবেক্ষক হিসেবে ছিলেন।