খেলার মাঠে সবার আগে
Nsports-logo

বুধবার, ১২ই মার্চ ২০২৫

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি প্রসঙ্গে খুঁটিনাটি তথ্য

প্রায় আট বছরের বিরতির পর আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নবম আসর শুরু হচ্ছে আগামীকাল (বুধবার) থেকে। মাঝে ২০২১ সালে মহামারি করোনার কারণে একটি আসর বাতিল করা হয়। পাকিস্তানের সঙ্গে এবারের প্রতিযোগিতায় নিরপেক্ষ (কেবল ভারতের ম্যাচ) ভেন্যু হিসেবে ম্যাচ আয়োজন করবে দুবাই। ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপাজয়ী পাকিস্তান কাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসরের উদ্বোধনী ম্যাচ খেলবে।

করাচির ন্যাশনাল ব্যাংক স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে দুপুর ৩টায়। সব ম্যাচই শুরু হবে একই সময়ে, হবে দিবারাত্রীর লড়াই। ৯ মার্চ লাহোর কিংবা দুবাইয়ে (ভারত উঠলে) হবে আসরের ফাইনাল। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে গ্রুপ ‘এ’তে আছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। ‘বি’ গ্রুপের প্রতিযোগী অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তান।

এক নজরে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রয়োজনীয় সব তথ্য
যেভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে ৮ দল
১৯৯৮ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। টুর্নামেন্ট শুরুর ৬ মাস আগে র‌্যাঙ্কিংয়ের প্রথম আটটি দল এতে অংশ নেওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হতো। তবে এবারের আসরের আটটি দল টিকিট নিশ্চিত করে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স বিবেচনায়। ১০ দলের পয়েন্ট টেবিলে সেরা আটে (আয়োজক দেশসহ) থাকা দলগুলো চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য নির্বাচিত হয়। যেখানে জায়গা হয়নি সাবেক দুই চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অভিষেক
শ্রীলঙ্কা ও ক্যারিবীয়দের মতো দল এবারের আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে না পারলেও, ২০২৩ বিশ্বকাপে স্মরণীয় পারফর্ম দেখানো আফগানিস্তান টুর্নামেন্টটিতে জায়গা করে নিয়েছে প্রথমবারের মতো। ওয়ানডে বিশ্বকাপে আফগানরা ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো পরাশক্তিদের হারিয়েছিল। যা চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তাদের অভিষেক আসরের দরজা খুলে দিয়েছে।

দুটি ফরম্যাটের সর্বশেষ দুই বিশ্বকাপেই (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) দুর্দান্ত পারফর্ম করা আফগানদের জন্য চ্যাম্পিয়নস ট্রফি না খেললেই বরং বিস্ময়ের হতো। হাশমতউল্লাহ শহিদীর দলটি ভারত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার দৌড়েও ছিল। এ ছাড়া ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবার উঠেছিল সেমিতে।

ফরম্যাট
২০০৬ সাল থেকে ৮ দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। যেখানে চারটি করে দল নিয়ে দুটি গ্রুপে ম্যাচ হবে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে। গ্রুপপর্বে তিনটি করে ম্যাচ খেলবে প্রতিটি দল। এরপর পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুটি দল সেমিফাইনালে উঠবে। সর্বশেষ দুই সেমির লড়াইয়ে বিজয়ী দুই দল উঠবে ফাইনালে।

প্রাইজমানি
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগের আসরের চেয়ে এবার মোট প্রাইজমানি বাড়ানো হয়েছে ৫৩ শতাংশ। সবমিলিয়ে প্রতিযোগী ৮টি দেশের জন্য আর্থিক পুরস্কার থাকছে ৬.৯ মিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৪ কোটি টাকা। যেখানে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলের জন্য বরাদ্দ ২২ লাখ ৪০ হাজার ডলার বা প্রায় ২৭ কোটি ৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। রানার্সআপ দল পাবে চ্যাম্পিয়ন দলের অর্ধেক অর্থ। অর্থাৎ, তারা পাবে ১১ লাখ ২০ হাজার ডলার বা প্রায় ১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

এভাবে তৃতীয় থেকে অষ্টম অবস্থান পর্যন্ত থাকা প্রত্যেক দলের জন্যই থাকছে নির্দিষ্ট অঙ্কের আর্থিক পুরস্কার। সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানধারী দুই দল পাবে সমান ৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার বা প্রায় ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা করে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ দল প্রাইজমানি হিসেবে পাবে ৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার বা প্রায় ৪ কোটি ২২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা করে। সপ্তম ও অষ্টম দল প্রাইজমানি হিসেবে পাবে ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার বা প্রায় ১ কোটি ৬৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা করে।

এ ছাড়া টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্যও থাকছে আর্থিক পুস্কার। প্রতিটি দল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য পাবে ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার বা প্রায় ১ কোটি ৫১ লাখ ৩ হাজার টাকা করে। এর সঙ্গে যুক্ত হবে গ্রুপপর্বে প্রতিটি ম্যাচ জয়ের আলাদা অর্থ। প্রতি ম্যাচে বিজয়ীরা ৩৪ হাজার ডলার বা প্রায় ৪১ লাখ ৮ হাজার টাকা করে পাবে।

ম্যাচ দেখা যাবে যেভাবে 
বৈশ্বিক এই আসরের ম্যাচগুলো সরাসরি সম্প্রচার টিভিতে দেখা যাবে ১২টি দেশ ও অঞ্চল থেকে। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো কোনো আইসিসি ইভেন্ট ডিজিটাল প্লাটফর্মে সম্প্রচারিত হতে যাচ্ছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে মোট ১৬টি ফিডে ৯টি ভাষায় খেলা উপভোগ করতে পারবেন দর্শকরা। ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা, হিন্দি, মারাঠি, হারিয়ানাভি, ভোজপুরি, তামিল, তেলেগু এবং কন্নড় ভাষায় ধারাভাষ্য শুনতে পাবেন সমর্থকরা।

তবে টিভিতে খেলা দেখার ক্ষেত্রে ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি, তামিল, তেলেগু ও কন্নড় ভাষায় সরাসরি খেলা উপভোগ করতে পারবেন সমর্থকরা। স্টার স্পোর্টের চ্যানেলগুলো এবং স্পোর্টস ১৮–তে এসব ভাষায় খেলা সম্প্রচারিত হবে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সবগুলো ম্যাচ বাংলাদেশের দর্শকরা সরাসরি দেখতে পারবেন টি স্পোর্টস এবং নাগরিক টিভিতে। এ ছাড়া অনলাইনেও খেলা দেখার সুযোগ থাকছে। সরাসরি সম্প্রচার হবে টফি অ্যাপে।

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচসমূহ
৮ দলের প্রতিযোগিতায় সবগুলো ম্যাচই গুরুত্বের বিচারে কোনো অংশে পিছিয়ে থাকবে না। এর মধ্যেও কিছু বিশেষ লড়াই রয়েছে, যার জন্য এখন থেকেই উন্মাদনা ও রোমাঞ্চের আভাস মিলছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড। পরদিন (২০ ফেব্রুয়ারি) নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ-ভারত।

এ ছাড়া দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান-ভারতের হাইভোল্টেজ ম্যাচটি হবে ২৩ ফেব্রুয়ারি। ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড, ২৫ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা, ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান-বাংলাদেশ, ১ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড ও ২ মার্চ ভারত-নিউজিল্যান্ড মুখোমুখি হবে।

৮ দলের টুর্নামেন্টে সর্বমোট ১৫টি ম্যাচ হবে। দুটি সেমিফাইনাল হবে ৪ ও ৫ মার্চ। এ ছাড়া ৯ মার্চ হবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল। এই তিন ম্যাচের জন্যই রিজার্ভ ডে রাখা হয়েছে।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy