শেষ ওভারের রোমাঞ্চেই হতাশার হার খুলনার
খুলনা টাইগার্সের জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২৫ রান। রিপন মন্ডলের করা ওভারের প্রথম তিন বলে দুই ছক্কায় ১২ রান তোলেন নাঈম শেখ। তাতে কিছুটা হলেও জয়ের স্বপ্ন দেখছিল টাইগার্স ভক্তরা। কিন্তু চতুর্থ বলে নাঈম আউট হলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় খুলনা। শেষ পর্যন্ত ৭ রানের জয় পেয়েছে তারা।
বিপিএলে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচটা শেষ দিকে ছড়িয়েছে রোমাঞ্চ। রোমাঞ্চকর সমাপ্তির পর খুলনা টাইগার্সকে ৭ রানে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। ৫৯ বলে ৭৭ রানের ইনিংস খেলে শেষ ওভারে আউট হয়েছেন নাঈম শেখ, ম্যাচটাকে জমিয়ে রেখেছেন তিনিই।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ফরচুন বরিশালকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় খুলনা টাইগার্স। আগে ব্যাট করতে নামা বরিশালের শুরুটা ভালো হয়নি। গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফিরে গেছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। পরের বলেই ফিরেছেন ডেভিড মালান, তিনিও গোল্ডেন ডাক। দুজনকেই ফিরিয়েছেন খুলনার অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।
চারে নেমে সুবিধা করতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ৪ বলে ৫ রান করে দলের ১৬ রানের মাথাতে বিদায় নেন মুশফিক। টিকে ছিলেন ওপেনার তাওহিদ হৃদয়। মুশফিকের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পরিস্থিতি সামাল দেন হৃদয় এবং রিয়াদ। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩০ রান তুলেছে বরিশাল।
সময়ের সাথে সাথে রানের গতি বাড়িয়েছে বরিশাল। দলের ৬৩ রানের মাথায় আউট হওয়ার আগে ৩০ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলেছেন হৃদয়। রিয়াদ টিকে ছিলেন। সাবলীল ব্যাটিংয়ে ক্রিজে টিকে ছিলেন তিনি। মাঝে দ্রুত আরও ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে বরিশাল। আউট হয়েছেন মোহাম্মদ নবী এবং ফাহিম আশরাফ।
এরপর ক্রিজে আসেন রিশাদ হোসেন। এসেই তোলেন ঝড়। রিয়াদ ফিফটি ছুঁয়েছেন। ৪৫ বলে ৫০ রান করে দলের ১৩৪ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরে যান রিয়াদ। শেষ দিকে রিশাদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সুবাদে ১৫০ পেরিয়েছে বরিশাল।
১৯ বলে ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন রিশাদ। এছাড়া ৪ বলে ১২ রান করে টিকে ছিলেন তানভীর ইসলাম। নির্ধারিত ২০ ওভারের খেলা শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রানের পুঁজি দাঁড় করায় ফরচুন বরিশাল।
খুলনার হয়ে ৩ উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২ উইকেট শিকার করেছেন সালমান ইরশাদ। ১টি করে উইকেট তুলেছেন নাসুম আহমেদ এবং জিয়াউর রহমান।
জবাব দিতে নেমে ডাক মেরে সাজঘরে ফিরেছেন খুলনা টাইগার্সের ওপেনার ইমরুল কায়েস। ২ বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন ইমরুল। এরপর লড়াই চালিয়েছেন তিনে নামা অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ এবং টিকে থাকা ওপেনার নাঈম শেখ। তেড়েফুঁড়ে মারার চেয়ে উইকেটে টিকে থাকার প্রতিই বেশি মনযোগী ছিলেন দুজন। ফলের রানের গতি ছিল কিছুটা ধীর। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ৩১ রান তুলেছে খুলনা, হারিয়েছে ইমরুলের উইকেট।
পাওয়ারপ্লে শেষেও ধীরে চলো নীতিতে এগিয়েছেন নাঈম এবং মিরাজ। খুব একটা আগ্রাসী ছিলেন না কেউই। ফলে চাপ বেড়েছে দলের উপর। দলের ৬৫ রানের মাথাতে ২৯ বলে ৩৩ রান করে আউট হয়েছেন মিরাজ। চারে নেমে সুবিধা করতে পারেননি অ্যালেক্স রস। ৮ বলে ৪ রান করে বিদায় নেন রস।
রসের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। টিকে থাকা নাঈম ফিফটির পথেই এগোচ্ছিলেন, তবে কচ্ছপগতির ব্যাটিংয়ে। মাঝে কিছু বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ফিফটির কাছাকাছি চলে যান নাঈম শেখ। দারুণ এক ছক্কা হাঁকিয়ে ফিফটি ছুঁয়েছেন নাঈম। শেষ দিকে হাত খুলে মারতে শুরু করেন নাঈম শেখ।
আফিফ চালিয়েছেন আগ্রাসী ব্যাটিং। থেমেছেন ১৭ বলে ২৭ রান করে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২৫ রান দরকার ছিল খুলনার। স্ট্রাইকে ছিলেন নাঈম শেখ, বোলার রিপন মন্ডল। প্রথম বল ডট, পরের বলে ছক্কা। পরের বলে আবারও ছক্কা। চতুর্থ বলে আউট হয়েছেন নাঈম। ২ বলে দরকার ছিল ১৩ রান। আমের জামাল ক্রিজে এসে হাঁকিয়েছেন চার। শেষ বলে আসে ১ রান। ৭ রানে জিতেছে ফরচুন বরিশাল। নাঈম খেলেছেন ৫৯ বলে ৭৭ রানের ইনিংস।