চেলসিকে হারিয়ে শীর্ষস্থান মজবুত লিভারপুলের
ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে বুধবার রাতে লিগ ম্যাচে ৪-১ গোলে জিতেছে লিভারপুল।
স্বাগতিকদের জয়ের নায়ক কনর ব্র্যাডলি। একটি গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দুটি গোলে অবদান রাখেন তিনি। একটি করে গোল করেন দিয়োগো জটা, দমিনিক সোবোসলাই, লুইস দিয়াসও। সফরকারীদের একমাত্র গোলটি করেন ক্রিস্তোফা এনকুনকু।
ব্যবধান বাড়তে পারত আরও। পেনাল্টি মিস করেন লিভারপুল ফরোয়ার্ড দারউইন নুনেস। তার আরও তিনটি প্রচেষ্টা বাধা পায় পোস্ট কিংবা ক্রসবারে। দারুণ কিছু সেভ করেন চেলসির গোলরক্ষক জর্জি পেত্রোভিচ। প্রিমিয়ার লিগে এই দুই দলের মুখোমুখি টানা পাঁচ ম্যাচ ড্রয়ের পর অবশেষে জিতল কোনো দল।
আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি আবার মুখোমুখি হবে লিভারপুল ও চেলসি, ওয়েম্বলিতে লিগ কাপের ফাইনালে। মৌসুম শেষে ক্লপের কোচের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পর প্রিমিয়ার লিগে প্রথমবার মাঠ নামল লিভারপুল। দলটির কোচ হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে ২০০তম জয়ের স্বাদ পেলেন ক্লপ। এই জার্মান কোচ মাইলফলকটি স্পর্শ করলেন ৩১৮তম ম্যাচে। তার চেয়ে কম ম্যাচে প্রিমিয়ার লিগে ২০০তম জয়ের স্বাদ পেয়েছেন কেবল ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গুয়ার্দিওলা, ২৬৯ ম্যাচ।
ম্যাচে লিভারপুলের একচেটিয়া আধিপত্যের প্রমাণ মেলে পরিসংখ্যানেও। গোলের জন্য মোট ২৮টি শট নিয়ে ১৩টি লক্ষ্যে রাখে তারা। অন্যদিকে চেলসির মাত্র ৪ শটের তিনটি লক্ষ্যে ছিল। ষষ্ঠ মিনিটে ভার্জিল ফন ডাইকের চ্যালেঞ্জে লিভারপুলের বক্সে কনর গ্যালাঘার পড়ে গেলে পেনাল্টির আবেদন করেন চেলসির খেলোয়াড়রা। তবে রেফারির সাড়া মেলেনি। ওই মুহূর্ত বাদ দিলে প্রথমার্ধে চেলসিকে আর সেভাবে খুঁজেই পাওয়া যায়নি।
অষ্টম মিনিটে নুনেসের দূরপাল্লার শট পেত্রোভিচের হাত ছুঁয়ে ক্রসবারে লাগে। অষ্টাদশ মিনিটে বক্সে ঢুকে উরুগুয়ের এই ফরোয়ার্ডের নেওয়া আরেকটি শট ঝাঁপিয়ে পড়া পেত্রোভিচের হাত ছুঁয়ে পোস্টে লাগে।
২৩তম মিনিটে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ব্র্যাডলি নিজেদের অর্ধ থেকে বল ধরে এগিয়ে বক্সের সামনে বাড়ান জটাকে। প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড়ের মাঝ দিয়ে এগিয়ে কাছ থেকে গোলটি করেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।
৩১তম মিনিটে কার্টিস জোন্সের শট ঝাঁপিয়ে ফেরান পেত্রোভিচ। ৩৯তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ব্যাডলি। দিয়াসের পাস ধরে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ২০ বছর বয়সী ডিফেন্ডার।
বিরতির আগে জটা চেলসির বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় লিভারপুল। তবে নুনেসের স্পট কিক পোস্টে লাগে।দ্বিতীয়ার্ধেও আধিপত্য ধরে রেখে খেলতে থাকে লিভারপুল। ৬১তম মিনিটে নুনেসের শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। চার মিনিট পর স্কোরলাইন ৩-০ করেন সোবোসলাই। নিজেদের অর্ধ থেকে ফন ডাইকের উঁচু করে বাড়ানো বল ধরে ডান দিক দিয়ে এগিয়ে ব্র্যাডলি ক্রস দেন বক্সে, আর হেডে গোলটি করেন হাঙ্গেরিয়ান মিডফিল্ডার।
৭১তম মিনিটে ব্যবধান কমান এনকুনকু। সতীর্থের পাস বক্সে পেয়ে দুই ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে নিচু শটে গোলটি করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।
৭৫তম মিনিটে আরেকবার ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি লিভারপুল। এ যাত্রায় নুনেসের হেড ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। ৭৯তম মিনিটে ঠিকই তিন গোলের লিড পুনরুদ্ধার করে তারা। বাঁ দিক থেকে নুনেস পাস দেন বক্সে, ছুটে গিয়ে কাছ থেকে জালে পাঠান দিয়াস।
বাকি সময়ে আর পরিষ্কার সুযোগ পায়নি কেউ। বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লিভারপুল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দলের চেয়ে তারা এগিয়ে রইল ৫ পয়েন্টে।
২২ ম্যাচে ১৫ জয় ৬ ড্রয়ে লিভারপুলের পয়েন্ট হলো ৫১। দিনের আরেক ম্যাচে বার্নলিকে ৩-১ গোলে হারানো ম্যানচেস্টার সিটি ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে, পেপ গুয়ার্দিওলার দল অবশ্য একটি ম্যাচ কম খেলেছে।
২২ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে তিনে আছে আর্সেনাল। ব্রেন্টফোর্ডকে ৩-২ গোলে হারানো টটেনহ্যাম হটস্পার ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে। তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে আছে অ্যাস্টন ভিলা।
আসরে ২২ ম্যাচে নবম হারের স্বাদ পাওয়া চেলসি ৩১ পয়েন্ট নিয়ে ১০ নম্বরে আছে।