ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো মাঠে নামা মানেই যেন রেকর্ডের পাতায় নতুন কোনো সংযোজন। একমাসেরও বেশি সময় পর মাঠে নেমে শনিবার জোড়া গোল করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিকের (৬৫ বছরের পুরোনো) রেকর্ড স্পর্শ করেছেন এই উইঙ্গার।
১৯৬১ সাল থেকে ধরে রাখা রেকর্ডে আর্সেনাল ও ফুলহ্যামের সাবেক তারকার পাশে বসেছেন সিআরসেভেন।
৬৬তম মিনিটে জাল কাঁপিয়ে ক্যারিয়ারের ৬৭ নম্বর হ্যাটট্রিকের খুব কাছে ছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তবে ভিএআরে কাটা পড়ে সিআর সেভেনের তৃতীয় গোল।
হ্যাটট্রিক না পেলেও জোড়া গোল করে আজ সৌদি প্রো লিগে আল নাসরের ৩-০ গোলের জয়ের নায়ক রোনালদো।
ক্লাবটির বাকি গোলটি করেন রোনালদোর পর্তুগিজ সতীর্থ জোয়াও ফিলিক্স।
রোনলাদোর কাছে যে বয়স কেবলই সংখ্যা সেটা প্রতিনিয়তই প্রমাণ করে যাচ্ছেন।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ৩০ পেরোনোর পর পর্তুগিজ মহাতারকা যত গোল করেছেন, সেটা ৩০ এর আগের চেয়ে বেশি।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৩০ বছরে পা রাখা সিআর সেভেন খেলেছিলেন মোট ৭১৮ ম্যাচ, গোল সংখ্যা ৪৬৩।
গড়ে প্রতি ১২২ মিনিটে একটি করে গোল করেন ৪০ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।
৩০ পেরোনোর পর যেন তারুণ হয়েছেন রোনালদো।
এই ১০ বছরে তিনি করেছেন ৪৯৩ গোল, যা তাকে নিয়ে গেছে ইতিহাসের পাতায়—রনি রুকের পাশে।
ফুটবলের পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা রেক.স্পোর্ট.সকার স্ট্যাটিস্টিকস ফাউন্ডেশনের (আরএসএসএসএফ) এর তথ্য অনুযায়ী, ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ৩০ বছর বয়সের পর সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটি এককভাবে ধরে রেখেছিলেন রনি রুক—তার গোলসংখ্যাও ছিল ৪৯৩।
১৯৪১ সালে ৩০ বছরে পা রাখার পর ২০ বছর পর্যন্ত ইউরোপের বিভিন্ন স্তরে ফুটবল খেলেছেন রনি রুক।
৩০–এর পর আর্সেনাল ও ক্রিস্টাল প্যালেসের মতো ক্লাবে খেললেও, তার সবচেয়ে গোলসমৃদ্ধ সময়টা কেটেছে ফুলহামে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে ফুলহ্যামের হয়ে লিগে ৮৭ ম্যাচে ৫৭ গোল করেছিলেন তিনি।
যুদ্ধকালীন সময়েও রনি রুক ফুটবল খেলা চালিয়ে যান। একই সঙ্গে তিনি রয়্যাল এয়ার ফোর্স (আরএএফ)-এ দায়িত্ব পালন করেন।
ওই সময়ে ফুলহামের হয়ে যুদ্ধকালীন ম্যাচে তিনি মোট ১৯৯টি ম্যাচ খেলেন এবং ২১২টি গোল করেন।
তারপর রনি রুক আর্সেনাল ও ক্রিস্টাল প্যালেসে খেলেন।
পরবর্তী সময়ে লিগের নিচের স্তরে নেমে বেডফোর্ড টাউন, হেওয়ার্ডস হিথ টাউন ও অ্যাডলস্টোনের মতো ক্লাবের হয়েও মাঠে নামেন।
সব মিলিয়ে, ৩০ বছর বয়স পার করার পর তিনি করেছিলেন ৪৯৩ গোল—যে রেকর্ডটি তার ১৯৬১ সালে অবসর নেওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন অটুট ছিল।
আজ আল আখদৌদের বিপক্ষে ৩১ মিনিটে প্রথম গোলের পর প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে দ্বিতীয় গোল করেই রনি রুকের রেকর্ডে ভাগ বসান রোনালদো।
রোনালদোর যে ফিটনেস তাতে ৬৫ বছরের পুরোনো এই রেকর্ড ভেঙে যাওয়া কেবলই সময়ের ব্যাপার।
৩০ ডিসেম্বর আল ইত্তিফাকের বিপক্ষে ম্যাচেই হয়তো এই রেকর্ডের মালিক হয়ে যাবেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার।
ক্যারিয়ারে রোনালদোর গোলসংখ্যা এখন ৯৫৬টি। হাজার গোলের অসাধারণ মাইলফলকের আরও কাছে সিআরসেভেন।

