হৃদয়-জাকেরের ১৫৪ রানের এক জুটিতেই যত বিচিত্র রেকর্ড
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ মানেই বাংলাদেশি দর্শকদের মনে বাড়তি উত্তেজনা। টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা যখন দ্রুত উইকেট হারিয়ে দর্শকদের আগ্রহে পানি ঢেলে দিয়েছিলো, ঠিক তখনই উদ্ধারকাজে নেমে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১৫৪ রান এনেছেন তাওহীদ হৃদয় এবং জাকের আলি অনিক। সেটি স্বস্তি এনে দিয়েছে কিছুটা। সঙ্গে কয়েকটি রেকর্ডের মালিক বনে গেছেন বাংলাদেশি এই দুজন ব্যাটার।
৩৯ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর অক্ষর প্যাটেলের বলে রোহিত শর্মা ওই সহজ ক্যাচটা নিতে পারলে হয়তো বিপদের মাত্রা আরেকটু বাড়তো। কিংবা তাওহীদ হৃদয়ের ক্যাচটাও যদি মিস না করতো ভারত, তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা আরও খানিকটা শোচনীয় হতেই পারতো। জীবন পেয়ে হৃদয় আর জাকেরের ব্যাটিং চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে অন্তত কিছুটা লড়াইয়ের সুযোগ করে দিয়েছে।
তবে ম্যাচ শেষে হৃদয়ের ক্র্যাম্প নিয়ে করা সেঞ্চুরি কিংবা স্রোতের বিপরীতে থাকা সেঞ্চুরি খুব একটা আলোচিত হয়নি। কারণ স্বাভাবিকভাবেই গল্পটা বরাবরই হয় বিজয়ীদের নিয়ে। আর ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে সেই বিজয়ী শুবমান গিল। গতকাল তিনি ক্যারিয়ারের ৮ম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন।
ম্যাচ হারলেও হৃদয় আর জাকেরের জুটিকে ছোট করে দেখার অবকাশ নেই। ম্যাচের পরিস্থিতি, উইকেট আর কন্ডিশন সবমিলিয়ে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা জুটি এটি। এমনকি পরিসংখ্যানও জানাচ্ছে সেই তথ্যই। দুজনের ব্যাটে ভর করে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দেখা গিয়েছে বেশ কিছু বিচিত্র রেকর্ডও।
বাংলাদেশের দুই ব্যাটার গতকাল ষষ্ঠ উইকেটে তুলেছেন ১৫৪ রান। ভারতের বিপক্ষে এটি ওয়ানডেতে ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ। এমনকি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও ষষ্ঠ বা এরনিচে সবচে বেশি রানের জুটি। পেছনে পড়েছে ২০০৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার মার্ক বাউচার এবং জাস্টিন কেম্পের ১৩১ রানের পার্টনারশিপ।
দুজনের এই জুটির সুবাদে বিচিত্র দুই রেকর্ডও পেয়েছে ক্রিকেট দুনিয়া। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কোন দলের ৫ উইকেট হারানোর পর সবচে বেশি ওভার (৪১.১ ওভার) ব্যাট করার নতুন রেকর্ড এখন বাংলাদেশের।
সবচে বেশি রান (১৯৩ রান) তোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অবশ্য দুইয়ে থাকবে। কলম্বোতে ২০০২ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ৫ উইকেট হারানোর পর ভারত ইনিংসে নিয়েছিল আরও ২০১ রান।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ৫ বা এর নিচে নেমে ভারতের বিপক্ষে জোড়া ফিফটি করার রেকর্ড আগে ছিল শ্রীলঙ্কার দখলে। ২০০২ সালে মাহেলা জয়াবর্ধনে এবং রাসেল আর্নল্ডের পর আজ তা করে দেখালেন হৃদয় ও জাকের আলী অনিক।
এছাড়া, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ৭ বা এরপর নেমে ভারতের বিপক্ষে প্রথম এশিয়ান ক্রিকেটার হিসেবে জাকের আলী অনিক ফিফটি পেয়েছেন। জাভেদ ওমর বেলিম (২০০০), সাকিব আল হাসান (২০০৬), তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম (২০১৭) এর পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফির অভিষেকে দেখা গেল হৃদয়-জাকেরের পঞ্চাশ পেরুনো ইনিংস।
