হ্যাট্রিক জয়ে বরিশালকে টপকে ২য় স্থানে চিটাগং কিংস, নড়বড়ে সিলেট
বিপিএলের ১১তম আসরের প্রথম ম্যাচেই খুলনা টাইগার্সের কাছে হার দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল চিটাগং কিংস। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে টুর্নামেন্টে হ্যাটট্রিক জয় তুলে নিয়েছে বন্দরনগরীর দলটি। চতুর্থ ম্যাচে দুর্দান্তভাবে সিলেটকে রানে হারিয়েছে মিথুন-শরিফুলরা। এতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে বরিশালকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে চিটাগং কিংস। ৫ ম্যাচ খেলে বরিশালের পয়েন্ট ৬ হলেও রান রেটে এগিয়ে রয়েছে সিলেট।
আগে ব্যাট করতে নেমে ২০৩ রানের পুঁজি দাঁড় করায় কিংসরা। জবাবে স্ট্রাইকার্সদের ইনিংস থেমেছে ১৭৩ রানে। জাকের আলি অনিকের অসাধারণ ইনিংসের পরেও জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারেনি সিলেট স্ট্রাইকার্স।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে চিটাগংকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। শুরুতে এক প্রান্তে কিছুটা রয়েসয়ে খেলছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। আরেক প্রান্তে উসমান খান চালিয়ে খেলছিলেন। ১০ বলে ৭ রান করা ইমন থেমেছেন দলের ৩২ রানের মাথায়। তিনে নামা গ্রাহাম ক্লার্কের সাথে জুটিটা জমে যায় উসমানের। দারুণ সাবলীল ব্যাটিংয়ে এগিয়েছেন দুজন। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ইমনের উইকেট হারিয়ে ৪৬ রান তোলে চিটাগং কিংস।
পাওয়ারপ্লে শেষেও থামেনি তাণ্ডব। দারুণ কার্যকরী ব্যাটিংয়ে আগাতে থাকেন উসমান-ক্লার্ক। ফিফটি ছুঁয়ে ফেলেন উসমান। ফিফটির পরেই থেমেছেন অবশ্য। ৩৫ বলে ৫৩ রান করে দলের ১০০ রানের মাথাতে আউট হন উসমান।
ক্লার্ককে অবশ্য থামানো যায়নি। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দারুণ সব শটে দলের বোর্ডে রান তুলতে থাকেন ক্লার্ক। হাঁকিয়েছেন ফিফটিও। উসমানের মত ফিফটির পর বেশি দূর আগাতে পারেননি ক্লার্কও। ৩৩ বলে ৬০ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলে দলের ১৪৮ রানের মাথায় আউট হন গ্রাহাম ক্লার্ক।
মাঝে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ১৯ বলে ২৮ রানের ছোট্ট এক ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন। শেষ দিকে ঝড় তুলেছেন হায়দার আলী। ১৮ বলে ৪২ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন হায়দার। ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ২০৩ রান তুলে থেমেছে চিটাগং কিংস।
সিলেটের হয়ে ২ উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব। ১টি করে উইকেট তুলেছেন নাহিদুল ইসলাম, রুয়েল মিয়াহ এবং আরিফুল হক।
জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই নড়বড়ে সিলেট স্ট্রাইকার্স। প্রথম ওভারেই ওপেনার পল স্টার্লিংয়ের উইকেট হারিয়েছে সিলেট। গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফিরেছেন স্টার্লিং। তিনে নেমে জাকির হাসান কিছুক্ষণ লড়াই চালিয়েছেন। ১৯ বলে ২৫ রান করে দ্রুত বিদায়ও নেন জাকির। টিকে থাকা ওপেনার রনি তালুকদার সাবলীল ছিলেন না। আউট হয়েছেন দলীয় ৪২ রানের মাথাতে, করেছেন ৯ বলে ৭ রান। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারের খেলা শেষে সিলেটের বোর্ডে ৪৬ রান, উইকেট হারিয়েছে ৩টি।
পাওয়ারপ্লে শেষে যেন কিছুটা ঝিমিয়ে পড়ে সিলেটের ইনিংস। অ্যারন জোন্স এগিয়েছেন রয়েসয়ে। ১৮ বলে করেছেন ১৫ রান, আউট হয়েছেন দলের ৬৪ রানের মাথায়। জোন্সের বিদায়ের পর দলকে কিছুটা কক্ষপথে ফেরানোর চেষ্টা চালিয়েছেন জর্জ মানসি এবং জাকের আলি অনিক। কার্যকরী ব্যাটিংয়ে ফিফটি ছুঁয়েছেন মানসি। ফিফটি ছুঁয়েই অবশ্য থামতে হয়েছে। ৩৭ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে দলের ১২৬ রানের মাথায় আউট হন মানসি। ততক্ষণে দলের জেতার সমীকরণ অনেক কঠিন হয়ে গেছে।
শেষের দিকে টর্নেডো চালিয়েছেন জাকের। অধিনায়ক আরিফুল হক ৭ বলে ১২ রানের ক্যামিও খেলেছেন। জাকের ছুটেই গিয়েছেন। ২৩ বলে ৪৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলের হারের ব্যবধান কমিয়েছেন জাকের। ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান তুলে থেমেছে সিলেটের ইনিংস। ৩০ রানে জিতেছে চিটাগং কিংস।
চিটাগং কিংসের হয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। ২ উইকেট তুলেছেন আলিস আল ইসলাম। ১টি করে উইকেট নেন নাবিল সামাদ, শরিফুল ইসলাম এবং খালেদ আহমেদ।